রৌমারীতে মাদ্রাসাা পড়–য়া দুই শিশু শিক্ষার্থীকে (১১) ধর্ষণ চেষ্টায় পালিয়ে গেছেন শিক্ষক। এ ঘনটায় মাদ্রাসাটি বন্ধ রাখা হয়েছে। ২৩ সেপ্টেম্বর শনিবার এলাকাবাসী বিষয়টি জানার জন্য মাদ্রাসায় গেলে, অভিযুক্ত ব্যক্তি পালিয়ে যায়। এমন অশালিন ঘটনার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
অভিযুক্ত মৌলানা মুফতী তানভীন মাহাতাব (৩৫) যাদুরচর এলাকার সায়দাবাদ লালকুড়া ইসলাহুননিসা ক্বওমি মহিলা মাদ্রাসার পরিচালক। তিনি যাদুরচর ইউনিয়নের বিক্রিবিল গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল বারেকের পুত্র।
গত সোমবার ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, দুই শিশু শিক্ষার্থী লালকুড়া ইসলাহুননিসা ক্বওমি মহিলা মাদ্রাসার বিশেষ জামায়াত (৫ম) শ্রেণীতে পড়াশোনা করতো। অভিযুক্ত মৌলানা মুফতী তানভীর মাহাতাব মাদ্রাসায় ছুটির পরে শিশু শিক্ষার্থীদেরকে প্রায় প্রায় ফুল দিয়ে বা হাত ধরে বিভিন্ন ভাবে শ্লিলতাহানির চেষ্টা করে আসতো।
ঘটনার দিন বুধবার বেলা ২ টায় ছুটির পর শিশু শিক্ষার্থীকে অফিসকক্ষ বন্ধ করে দেয়ার কথা বলে। পরে পেছন থেকে শিক্ষার্থীর হাত ধরে, শরীরের স্পষ্টকাতরসহ বিভিন্ন স্থানে হাত দেয়। এমন অবস্থায় হুজুরের সাথে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে জোড় পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। পরে ঝটকাঝটকির এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী দৌড়ে ধর্ষণের কবল থেকে বেচে যায়। দুই শিশু বাসায় এসে তাদের বাবা মাকে নির্যাতনের বিষয়টি জানায়। পরে ঘটনাটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার সরকার দলীয় ওয়ার্ড সভাপতিসহ স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানার জন্য মাদ্রাসায় যায়। এমনদৃশ্য পরিচালক মৌলানা মুফতি তানভীল মাহাতাব মাদ্রাসার পেছনে ভাঙ্গা দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় থমথমে ভাব রয়েছে। অভিযুক্ত পরিবার প্রভাবশালি হওয়ায় কোন এক মহল শিশুদের পরিবারকে ঘটনাটি থানায় মামলা করা থেকে বিরত রেখে ধামাচাপার চেষ্টা চলছে।
উক্ত মাদ্রাসার সহকারি শিক্ষক মৌলানা মোঃ এহসানুল হক বলেন, আমরা বিষয়টি শুনেছি, কিন্তু ঘটনার বিষয়ে লোকজন আসার আগে মাদ্রাসার ভাঙ্গাদিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। বর্তমানে মাদ্রাসাটি বন্ধ রয়েছে এবং এ মাদ্রাসার কোন ম্যানেজিং কমিটি নেই।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ বলেন, ইসলামীক শিক্ষা দেয় এমন নিকৃষ্ট শিক্ষকদের আমরা প্রশাসনের কাছে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন পূর্বক শাস্তির দাবী করছি।
স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি জহির আহমেদ, স্থানীয় মুরুব্বী মোতালেব হোসেন, মরতুজ আলী, শফিকুল ইসলাম, শাহাদৎ হোসেনসহ অনেকেই জানান, এ শিক্ষক হুজুরের এমন জঘন্নতম ঘটনার কথা জানার পর আমরা খুব ঘৃনীত। বিষয়টি নিয়ে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের বা আইনানুগ ব্যবস্থার চেষ্টায় রয়েছি।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মৌলানা মুফতি তানভীর মাহাতাবের সাথে মাদ্রাসায় গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। মাদ্রাসাটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
অভিযুক্ত মোৗলানা মুফতি তানভীর মাহাতাবের পিতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল বারেকের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি সাজানো। এলাকার মানুষ ছেলেকে ঐ মাদ্রাসা থেকে বেড় করে দেয়ার জন্য এমন নেক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে। এটা সম্পন্ন মিথ্যা ভিত্তিহীন।
ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, এমন ঘটনার বিষয়টি সঠিকতার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য রবিউল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা করা হবে।
রৌমারী থানা অফিসার ইনচার্জ রূপ কুমার সরকার জানান, আমাকে কোন অভিযোগ দেয়া হয়নি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।