মিয়ানমারে গত কয়েকদিনে সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলো ৬২ জন সৈন্যকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি সেনা ঘাঁটি দখল করেছে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী নিউজ।
দখল হওয়া ঘাঁটিগুলো মিয়ানমারের সাগাইং, ম্যাগউই, মান্দালয় জেলা এবং কাচীন ও কারেন প্রদেশ অবস্থিত। কতগুলো ঘাঁটি বিদ্রোহীরা দখলে নিয়েছে, এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। জান্তাবিরোধী দুই সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠী পিপল’স ডেমোক্রেটিক ফোর্স (পিডিএফ) এবং এথনিক আর্মড অর্গানাইজেশন (ইআও) সংঘাতে নেতৃত্ব দিচ্ছে। জান্তার পক্ষ থেকে এখনও এ ইস্যুতে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেওয়া হয়নি। তবে ইরাবতী জানিয়েছে, পিডিএফ এবং ইআও’র গণমাধ্যম শাখার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে এই সংবাদমাধ্যমটির।
দুই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নেতারা জানিয়েছেন, গত বছর মিয়ানমারের সাগাইং, ম্যাগউই, মান্দালয় জেলা এবং কাচিন ও কারেন প্রদেশের বেশ কিছু এলাকা দখল করে নিয়েছিল পিডিএফ এবং ইআও জোট। সেই এলাকাগুলো ফের দখল করার জন্য জানুয়ারির শেষদিকে অভিযান শুরু করেছিল জান্তা এবং জান্তা সমর্থক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো।
সেই অভিযানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাত থেকে কিছু এলাকা পুনর্দখল করতেও সক্ষম হয়েছিল জান্তা এবং জান্তা সমর্থক একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী। কিন্তু গত তিন দিনে জান্তার পুনর্দখল করা অধিকাংশ এলাকা থেকে সেনা সদস্য ও জান্তাপন্থীদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিডিএফ ও ইআও’র নেতারা। সবচেয়ে বেশি সেনা সদস্য নিহত হয়েছেন মান্দালয় জেলার সান পিয়া এবং কারেন প্রদেশের থান্ডুয়াঙ্গি শহরে। পিডিএফ জানিয়েছে, এ দুই এলাকায় জান্তা-বিদ্রোহী সংঘাতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন সেনা।
এছাড়া কারেন প্রদেশের একটি রত্নপাথরের পাথরের খনিও বর্তমানে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে চলে গেছে। মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে গত ৫ দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্বন্দ্বসংঘাত চলছে বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। তবে এই লড়াই নতুন গতি পেয়েছে ২০২১ সালে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলের পর থেকে।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচিকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করলে এই সংঘর্ষ নতুন মাত্রা পায়।