নারী ও শিশুকন্যার যৌন নির্যাতন আজ সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া।
তিনি বলেন, সমাজে যেসব অন্যায়-অপকর্ম ঘটে, তার মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট, ঘৃণ্য আর জঘন্যতম হচ্ছে ধর্ষণ। দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে ছয় মাস বয়সী শিশু থেকে শুরু করে কিশোরী, তরুণী; এমনকি মধ্যবয়সী নারীরাও ধর্ষকের হাত থেকে নিরাপদ নয়। কিছুদিন পরপরই এখানে-ওখানে, ঘরে-বাইরে, বাসে, রাস্তায়, স্কুলে, কলেজে, মাদ্রাসায় ও কর্মস্থলে ধর্ষণের মতো জঘন্য ঘটনা ঘটেই চলেছে। এর প্রতিকার আসলে কী? এর শেষ-ই বা কোথায়?
বুধবার (১৫ জানুয়ারী) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ মহিলা ন্যাপ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নারী নির্যাতন বন্ধে সরকার বিভিন্ন আইন ও শাস্তি নিশ্চিত করলেও সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের কারণেই নারীর ওপর সহিংসতা বাড়ছেই। যথাযথ আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এসব অপরাধীর আরও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সমাজের ছোট-বড় সব নারীর সম্মান রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
তিনি আরো বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নারীর ওপর সহিংসতা বন্ধের প্রয়াস চালাতে হবে। আমাদের শপথ হোক- এদেশে আর কোনো নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হবে না।
ন্যাপ মহাসচিব বলেন, ধর্ষককে বুক উঁচিয়ে নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াতে দেখে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার মেয়েটির কষ্ট আরও বাড়ে। অন্যদিকে শাস্তি পায় না বলেই আরও বড় অপরাধ করার স্পর্ধা পেয়ে যায় অপরাধীরা। এ বাস্তবতা অবলোকন করে অন্য অপরাধীরাও অপরাধ করতে উৎসাহিত হয় এবং আরও ভয়ংকর অপরাধের সঙ্গে নিজেকে জড়ায়। এভাবে সমাজ, জাতি ও রাষ্ট্র কলুষিত হচ্ছে। এদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের সেঞ্চুরি হয়; তারপরও ধর্ষক বুক ফুলিয়ে রাস্তাঘাটে নির্বিঘ্নে হেঁটে বেড়ায়!
তিনি বলেন, আজ আমরা এতটাই উন্নয়নের শিখরে উঠেছি, হাজারো ধর্ষিতার চিৎকার ও কান্না আমাদের কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না। ১৯৯১ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সরকার প্রধান হিসেবে দেশে নারীরাই দায়িত্ব পালন করে আসছেন। নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। কিন্তু এতো কিছুর পরও আজ স্বাধীনতার ৪৯ বছর পরে এসেও ধর্ষণের বিচার চেয়ে আমাদের রাস্তায় নামতে হয়। আমার প্রিয় জন্মভূমি ধর্ষকমুক্ত হোক; ধর্ষকদের দ্রুততম সময়ে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
সংগঠনের সমন্বয়কারী মতিয়ারা চৌধুরী’র সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ন্যাপ যুগ্ম মহাসচিব আতিকুল ইসলাম, এহসানুল হক জসিম, শান্তা আক্তার, ঢাকা মহানগর সভাপতি মো. শহীদুননবী ডাবলু, মহিলা ন্যাপ নেত্রী অধ্যাপিকা শিউলী সুলতানা, সাদিয়া ইসলাম ইমন, অর্চনা দাস, হালিমা খাতুন, সীমা আক্তার প্রমুখ।