কেরানীগঞ্জ সংবাদদাতা :
করোনাভাইরাসের প্রভাবে সারাদেশ কার্যত লকডাউন। আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে জীবন-যাপন করছে মানুষ। সবকিছু বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। সরকারিভাবে দুস্থ, অসহায় মানুষদের সহায়তা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। বিশ্বে করোনা মহামারি আকার ধারণ করেছে। করোনার এই ক্রান্তিলগ্নে নিজেকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি যে সমস্যায় সবাইকে পড়তে হচ্ছে তা হচ্ছে খাবারের সমস্যা। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে এই খাবারের জোগান দেওয়া অনেক কষ্টকর। আমাদের এই সমাজে অনেক মধ্যবিত্ত বা নিম্নবিত্ত পরিবার আছে যারা খাবারের অভাবে থাকলেও লোকলজ্জার কারণে মুখফুটে কাউকে বলতেও পারেন না। আর এমনটা চিন্তা করেই করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কর্মহীন, দুস্থসহ মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ৪হাজার ৫০০ পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন। আর এসব খাবার মিলবে শুধু একটি ফোন কলেই। তিনি কিছুদিন আগেও তার সকল ভাড়াটিয়াদের একমাসের ভাড়া (৪লাখ টাকা) মওকুফ করে দিয়ে মহত্ত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। প্রতিদিন ১৫০টি পরিবার মাঝে খাদ্যসামগ্রী (১ কেজি আটা, আধা কেজি পেঁয়াজ, আধা কেজি মশুরের ডাল, ১ কেজি আলু ও ২ কেজি চাল) বিতরণ করছেন। মাসব্যাপী চলবে এই কার্যক্রম। এ ব্যাপারে মুরাদ মেম্বার বলেন, আমার এই ৩নং ওয়ার্ডে ২৬হাজার ভোটার আছে। এর মধ্যে দিনমজুর পরিবারের সংখ্যাই বেশি। আর দুঃখজনক হলেও সত্য যে আমার ওয়ার্ডের মানুষের জন্য আমি কোনো সরকারি-বেসরকারি সাহায্য সহযোগিতা কিংবা ত্রান পাইনি। তাই প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও উপজেলা শাহিন আহমেদের দিক-নির্দেশনায় নিজস্ব অর্থায়নে প্রাথমিকভাবে মাসব্যাপী মোট সাড়ে ৪ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। আমার ওয়ার্ডের কেউ খাদ্যাভাবে পড়লে সংকোচ না করে, আমাদের ফোন দিলে আমরা গোপনে তার বাসায় খাবার পৌঁছে দিবো। তিনি তার ভোটারদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাবেন বলে জানান। তিনি আরো বলেন, জনগণ প্রথমবার ভোট দিয়ে আমায় নির্বাচিত করেছেন এবং তাদের ভালোবাসায় আমি দ্বিতীয়বার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাস করেছি। তাই আমি দায়িত্ব বোধ থেকে আমার ওয়ার্ডের জনগণের পাশে এই দুর্যোগের সময়ও থাকতে চাই। আর মাসব্যাপী দেয়ার পরেও যদি প্রয়োজন হয় তাহলে এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আমি দেশের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে আমার যে বাড়ি ভাড়া সেটা একমাসের জন্য মওকুফ করে দিয়েছি এবং আমি আশা করব আমাকে দেখে অন্য অনেক বাড়িওয়ালাও তাদের ভাড়াটিয়াদের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন। আমার স্বল্প প্রচেষ্টা এবং পূর্ণ আন্তরিকতা নিয়ে আপনাদের এই কঠিন সময়ে পাশে থাকতে চাই। সবাই নিরাপদে থাকেন সেটাই কামনা করি। তিনি বলেন, আমার এই উদ্যোগ দেখে যেন অন্যরা ব্যক্তিগতভাবে হতদরিদ্র ও কর্মহীনদের পাশে দাঁড়ান সেই আশা করব।