অনলাইন সংস্করণ
হাসপাতালের দোরে দোরে ঘুরেছিলেন কয়েক ঘণ্টা। অ্যাম্বুলেন্স নেই। পায়ে হেঁটেই এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতাল। প্রবল জ্বরে কোলেই নেতিয়ে পড়েছিল ছোট্ট ছেলেটা। বাঁচাতে পারলেন না মা। ক্লান্ত শরীর আর চিকিৎসার অভাবে মায়ের কোলেই চোখ বুজল ছেলে। সন্তানের মৃতদেহ আঁকড়ে ৪৮ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরলেন সন্তানহারা মা। সম্প্রতি ভারতের জেহানাবাদে এ ঘটনা ঘটে।মৃত শিশুটির বাবার নাম গিরেজ কুমার। তিনি ভারতের বিহারের শাহোপারের বাসিন্দা।
এক মিনিটের হৃদয় বিদারক একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, একজন মহিলা বিভ্রান্ত হয়ে কেঁদে চলেছেন। তার কোলে মৃত সন্তান। ঠিক তার পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন তার স্বামী। একজন সাহায্য করতে চান বলে শোনা যায় ভিডিওতে। আর তখনই শিশুটির বাবা উত্তর দেন, ‘এখন আর তাদের অ্যাম্বুলেন্সের দরকার নেই।’
শিশুটির বাবা গিরজ কুমার জানান, ‘বাচ্চাটি দুদিন আগে অসুস্থ হয়েছিল। জ্বর, সর্দি, কাশি হয়েছিল। শাহপুরে গ্রামের ডাক্তার তার চিকিৎসা করছিল, হঠাৎই বাচ্চার অবস্থা খারাপ হয়। তখন আমরা একটা টেম্পো ভাড়া করে জেহানাবাদের হাসপাতালে নিয়ে আসি ওকে। আমরা কোনও অ্যাম্বুলেন্স পাইনি লকডাউনের জন্য। জেহানাবাদে নিয়ে গেলে, সদর হাসপাতালের ডাক্তাররা বাচ্চাকে পটনা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে রেফার করে। কিন্তু আমরা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করতে পারিনি। আর এই অবহেলার কারণেই আমরা আমাদের সন্তানকে হারালাম।
যদিও সন্তান মারা যাওয়ার পর ওই ব্যক্তি এবং তার স্ত্রী, স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় বাড়ি ফেরেন। এই ভিডিওটি দেখার পর, ওই রাজ্যে সঠিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কোথায়- এই নিয়ে একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যেই রাজ্য নিয়ন্ত্রিত সদর হাসপাতালে ম্যানেজারকে সাসপেন্ড করেছে। কিছু চিকিৎসককে শোকজ নোটিস ধরানো হয়েছে।
জেহানাবাদের ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট নবীন কুমার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘যে কোনও রোগীকে অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দিতেই হবে। আমরা খোঁজ নিচ্ছি কীভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটল।’