শেরপুর প্রতিনিধিঃ
-প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেলেন শেরপুরের সেই ভিক্ষুক। বৈশ্বিক করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশের সকল জেলা ও উপজেলায় জীবনযাত্রাসহ সবকিছু স্থবির হয়ে পড়েছে। ঠিক এমন দুর্যোগ মুহূর্তে ঝিনাইগাতীর ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীনদের খাদ্য সহায়তায় গঠিত ইউএর’র ত্রাণ তহবিলে মঙ্গলবার বিকেলে নিজের ঘর মেরামতের জমানো ১০ হাজার টাকা দান করে মানবিকতার এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেন। বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র আলোচনার ঝড় উঠে। এমন মহতী উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে বুধবার ২২ এপ্রিল দুপুর ১২টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষ রজনীগন্ধায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, দুর্যোগ মুহূর্তে ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন তার ভিক্ষাবৃত্তির সঞ্চয়কৃত ঘর নির্মাণের জন্য জমানো ১০ হাজার টাকা করোনা তহবিলে জমা দেয়ায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে এই সংবর্ধনা প্রদান ও সম্মান জানানো হয়। যা এক দৃষ্টান্ত ও মাইলফলক হয়ে থাকবে।
এ সময় জেলা প্রশাসক নজিমুদ্দিনকে প্রথমে উত্তরীয় পরিয়ে দেন, পরে ফুলের তোড়া দিয়ে সংবর্ধনা জানান এবং তার হাতে নগদ ২০ হাজার টাকা দিয়ে একটি দোকান করার জন্য সব ধরণের সহযোগীতার নির্দেশ দেন ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদকে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মোতাবেক তাকে জমির বন্দোবস্তসহ ২৫ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রশাসক তার এ দানের ঘটনাটিকে একটি মহতী উদ্যোগ এবং মহানুভবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন। সমাজের অন্যদেরও এ থেকে শিক্ষা নেয়ার আছে বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এবিএম এহছানুল মামুন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফুল আলম রাসেল, ডিএম শাফিন আল সাদিক, নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মোঃ মিজানুর রহমানসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল (মঙ্গলবার) ঝিনাইগাতী উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ভিক্ষুক নজিমুদ্দিন তার সঞ্চয়কৃত দশ হাজার টাকা করোনা তহবিলে ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুবেল মাহমুদের হাতে তুলে দেন।