অনলাইন ডেস্ক
করোনা প্রাদুর্ভাবে দূরপাল্লার বাস ও গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ভেঙে ভেঙে ভিন্ন যানবাহনে করে রাজধানীতে ফিরছে দেশের নানা প্রান্তের মানুষ। রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোতে পুলিশের তল্লাশি কিছুটা শিথিল থাকায় রোববার সকাল থেকে সহজেই ঢাকায় ঢুকেছে লোকজন।করোনাভাইরাস রোধে ২৬ মার্চ থেকে সবধরনের গণপরিবহন বন্ধ করে সরকার। সরকারি অফিস না খুললেও গার্মেন্ট ও বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান খোলায় গত কয়েকদিন ধরেই ঢাকামুখী মানুষের চাপ বেড়েছে।
রোববার রাজধানীর গাবতলী, আবদুল্লাহপুর ও চিটাগং রোড ঘুরে দেখা যায়, নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাজধানীতে প্রবেশ করছে মানুষ। প্রবেশ পথের তল্লাশি চৌকিতেও পুলিশের তৎপরতা কম। কেউ মোটরসাইকেল, কেউবা লেগুনা-অটোরিকশায় করে অনায়াসে রাজধানীতে ঢুকছে। রাজধানীর প্রবেশপথে আসার আগেই লোকজনকে নামিয়ে দেয় ট্রাক, মিনি ট্রাক ও লেগুনাগুলো। সেখান থেকে পিকআপ ও অটোরিকশায় করে রাজধানীতে প্রবেশ করছেন তারা। পোশাক কারখানার শ্রমিকসহ নানা কাজে এসব লোকজন ঢাকায় আসছে।
জানা যায়, গত শনিবার পর্যন্ত পুলিশের ছয় শতাধিকেরও বেশি সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ কারণে রোববার রাজধানীর প্রবেশপথে পুলিশের তৎপরতা অনেকটা কম।শ্রমিকরা জানান, গার্মেন্ট খোলা। আগেই ঢাকায় যেতে গার্মেন্টস থেকে বলা হয়েছে। এ কারণে করোনার ভয় নিয়ে কষ্ট করেই রওনা হয়েছেন তারা। যেতে না পারলে চাকরি চলে যাবে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী সাদ হাম্মাদ বলেন, অফিস সীমিত পরিসরে খুলেছে। তাই করোনা উপেক্ষা করেই রাজধানীতে ফিরছি।
সীমিত আকারে পোশাক কারখানা চালু হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার শ্রমজীবী মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটছেন কর্মস্থলের উদ্দেশে। কেউ যাচ্ছেন রাজধানী ঢাকায়, কেউ নারায়ণগঞ্জ, কেউ গাজীপুরসহ আশপাশের এলাকায়। গণপরিববহন বন্ধ থাকায় কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে ফেরি ও ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার পর ঘাট থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে মিশুক, অটোরিকশাসহ ছোট ছোট যানবাহন দিয়ে ঢাকাসহ আশপাশ জেলার উদ্দেশে রওনা হন তারা।
শিমুলিয়া ঘাটের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, নৌরুট পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছোট ছোট যানবাহনে শ্রমজীবী মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে যাচ্ছেন নিজ নিজ কর্মস্থলের উদ্দেশে। অনেকে আবার বাধ্য হয়ে হেঁটেই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছেন। গতকাল পর্যন্ত ছয় দিন ধরেই দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার ঢাকামুখী শ্রমজীবী মানুষের ভিড় বেড়েছে শিমুলিয়া ঘাটে।
লৌহজং থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, রোববার সকাল থেকে শত শত মানুষ কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে ফেরি ও ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া ঘাট হয়ে ঢাকাসহ আশপাশ এলাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। এদের বেশির ভাগই শ্রমজীবী মানুষ।মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের টিআই মো. হেলালউদ্দিন জানান, সকালের দিকে বেশি চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমজীবী মানুষের চাপ কমতে থাকে।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চন্দ্র জানান, রো রো ফেরিসহ চার থেকে পাঁচটি ফেরি নৌরুটে সচল রাখা হয়েছে। জরুরি সেবায় নিয়োজিত ছোট ছোট কিছু যানবাহন থাকলেও কাঁঠালবাড়ী ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিতেই শ্রমজীবী মানুষ বেশি পারাপারই হয়েছেন।