অনলাইন ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের ধাক্কায় টালমাটাল গোটা বিশ্ব। ভ্যাকসিন তৈরির সব রকম চেষ্টা চলছে বিশ্বের একাধিক দেশে। অনেকেই বলছেন, বছর খানেকের মধ্যে এসে পড়বে প্রতিষেধক। কিন্তু ততদিন পর্যন্ত তো লড়তে হবে রোগটার সঙ্গে! তাই অ্যান্টিবডি দিয়ে চিকিৎসার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছে ইউনিভার্সিটি অব হায়দ্রাবাদ।হায়দ্রাবাদ ইউনিভার্সিটি ও সেন্টার ফর সেলুলার অ্যান্ড মলিকিউলার বায়োলজি একটি স্টার্ট আপ সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই গবেষণা করছে।জানা গেছে, ওই গবেষকরা ঘোড়া থেকে তৈরি অ্যান্টিবডি নিয়ে চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করতে চলেছে। তবে এটাই প্রথমবার নয়। এর আগেও বহুবার ঘোড়ার অ্যান্টিবডি দিয়ে বিভিন্ন মারণ রোগের চিকিৎসা করা হয়েছে।
অ্যান্টি-ভেনম, অ্যান্টি-টক্সিন বা অ্যান্টি ভাইরাল তৈরির কাজে লাগানো হয়েছে ঘোড়ার অ্যান্টিবডি। এবার করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে তার প্রয়োগ পরীক্ষা করা হচ্ছে। নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া করোনাভাইরাস দিয়ে ঘোড়ার শরীরে তৈরি করা হবে অ্যান্টিবডি। সেটাই করোনা আক্রান্তের শরীরে প্রয়োগ করলে ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় কিনা, পরীক্ষা করা হবে।
হায়দ্রাবাদ ইউনিভার্সিটিতে ড. নইরুদ্দিন খানের নেতৃত্বে এই গবেষণা চলছে।অন্যদিকে, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে যে ভ্যাকসিন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে, আর সেই ফলাফল খুব তাড়াতাড়ি হাতে আসবে বলে জানা যাচ্ছে।ইউনিভার্সিটির মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক স্যার জন বেল জানিয়েছেন, কয়েকশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। এটি অনুমোদন পেলেই প্রচুর পরিমাণ ভ্যাকসিন তৈরি করাটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে।
গত এপ্রিল মাসের শেষে মানুষের উপর প্রথম প্রতিষেধকের পরীক্ষা শুরু করে ইউরোপে। অক্সফোর্ডে প্রথম এই পরীক্ষা হয়। এই পরীক্ষা চালানোর জন্য ৮০০ জনকে বেছে নেয়া হয়।এই ৮০০ জনের মধ্যে অর্ধেক কে দেয়া হচ্ছে করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক ও বাকিদের দেয়া হবে কন্ট্রোল ভ্যাকসিন যা তাদের মেনিনজাইটিস থেকে রক্ষা করবে, করোনাভাইরাস থেকে নয়।
এই পরীক্ষা পদ্ধতি অনুযায়ী কাকে কোন ভ্যাকসিন দেয়া হবে তা তারা জানতে পারবেন না, জানবেন শুধুমাত্র চিকিৎসকেরা। প্রথম যে দু’জনের শরীরে এই ভ্যাকসিন দেয়া হয় তাদের মধ্যে একজন হলেন এলিসা গ্রানাতু। তিনি নিজেও পেশায় একজন বিজ্ঞানী, তাই বিজ্ঞানকে সমর্থন করার জন্য এগিয়ে এসেছেন তিনি।অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক সারা গিলবার্ট এর তত্ত্বাবধানে একটি টিম গত তিন মাসে এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। আর এই ভ্যাকসিন নিয়ে তারা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী বলে জানিয়েছেন সারা।
যদিও তিনি জানিয়েছেন যে পরীক্ষা করে তবেই তথ্য সংগ্রহ করতে হবে এরপরই বলা যাবে যে ওই ভ্যাকসিন মানুষের উপর কতটা কাজ করছে। তবে ভ্যাকসিন যে কাজ করবে সে ব্যাপারে ৮০ শতাংশ নিশ্চিত অধ্যাপক।একটি সাধারণ জ্বরের ভাইরাস থেকে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে, যা শিম্পাঞ্জির শরীর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এবার সেটিকে মডিফাই করা হয়েছে যাতে ওই ভাইরাস নতুন করে মানুষের শরীরের সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
এর আগে অক্সফোর্ডের টিম মার্সের ভ্যাকসিন তৈরি করেছিল, সেটাও এক ধরনের করোনাভাইরাস। তাই এবারের ফলাফল নিয়েও আত্মবিশ্বাস হারাচ্ছেন না তারা। সূত্র: কলকাতা২৪