পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। সে জন্য তারা উন্নয়ন কাজ করতে পারছেন না। আর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছে, সড়কটি তারা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেছেন। কাজেই সড়কটির মেরামত কিংবা পুনঃ পাকাকরণের দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। পৌরসভা এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের একে অপরের ওপর দায় চাপিয়ে কয়েক বছর ধরে কোন পক্ষই সংস্কার করছে না ঠাকুরগাও জেলার পীরগঞ্জ পৌরসভার ব্যস্ততম কাজী নজরুল ইসলাম পাকা সড়ক (টিএন্ডটি সড়ক)। এরই মধ্যে সড়কটির কার্পেটিং উঠে খানা-খন্দে ভরে গিয়ে কাঁদা পানিতে এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে যে, মানুষ চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে ধরণা দিয়ে প্রতিকার না পেয়ে গত বছর ঐ সড়কে ধানের চারা রোপন করে এর প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। তার পরেও কাজ হয়নি। চলতি বর্ষা মৌসুমে ওই সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণকাজ চলমান থাকায় সড়কে জলাবদ্ধতা স্থায়ী রুপ নিয়ে তা এখন “গোদের ওপর বিষ ফোঁড়া” হয়ে দেখা দিয়েছে। পৌর শহরের টিএন্ডটি রোড়ের মেডিসিন পয়েন্টের মালিক জামানের অভিযোগ, শহরের অত্যন্ত ব্যস্ত সড়ক এটি। এ সড়কে দোকানপাট ও জনবসতি ছাড়াও পল্লী বিদ্যুত অফিস, ব্র্যাক অফিস, মহিলা কলেজ, আরএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেন্টমেথিউজ ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অবস্থিত। পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর, জাবরহাট, বৈরচুনা এবং সেনগাও ইউনিয়নবাসীর পীরগঞ্জ উপজেলা সদরে ঢুকার একমাত্র সড়ক এটি। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত গাড়িঘোড়া চলাচল করে। অথচ শহরের বটতলা থেকে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস পর্যন্ত সড়কটি সংস্কার হয়না দীর্ঘদিন। কার্পেটিং উঠে বড় বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। বর্ষায় পানি জমে গর্তগুলো বড় বড় আকার ধারণ করলে এলাকাবাসী দাবীর মুখে গত বছর সড়কের কার্পেটিং তুলে মাটি মিশ্রিত খোয়া ফেলে পৌর কর্তৃপক্ষ। এর কয়েকদিন পরেই বৃষ্টির পানিতে মাটি কাঁদায় পরিণত হয়। এতে দুর্ভোগ কমার বদলে আরো বেড়ে যায়। এর প্রতিবাদ জানিয়ে সড়কের ওই কাঁদায় গত বছর ধানের চারা রোপন করে প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। তার পরেও কাজ হচ্ছে না। বর্তমানে সড়কের পশ্চিম পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মান করা হচ্ছে। ড্রেনের মাটি খুড়ে সড়কের পাশে রাখায় বর্ষার পানি বের হতে পারছে না। এতে সড়কটিতে জলাবদ্ধতা স্থায়ী রুপ নিয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, তারা পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে সড়কটি সংস্কার করার দাবি জানালে কর্তৃপক্ষ বলছেন, সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। তারাই এটা ঠিক করবে আর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বলছেন, তারা সড়কটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করেছেন। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। এ বিষয়ে পৌরসভার উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ শাহজাহান বলেন, সড়কটি পৌরসভার মধ্যে হলেও এটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের। কাজেই সেখানে আমাদের কাজ করা সুযোগ নেই। পীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন সড়কটির করুন অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, গত বছরেই তারা সড়কটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করেছেন। কাজেই তারাই সংস্কার করবেন। যেহেতু পৌরসভা সড়কের উভয় ধারের দোকানপাট এবং বাসাবাড়ির কর আদায় করেন, সেহেতু তাদের উচিত সড়কটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা।
অবশ্য পৌর মেয়র কশিরুল আলম বলছেন, সড়কটির বিষয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করা হচ্ছে। খুব শীঘ্রই একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।