মহামারি করোনাভাইরাসে দেশে গত একদিনে ১১৯ জনের মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট মারা গেলেন ১৪ হাজার ১৭২ জন।
এর আগে সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ১৯ এপ্রিল ১১২ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতোদিন সেটাই ছিলো একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু।একই সময়ে নতুন করে আরো ৫ হাজার ২৬৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট লাখ ৮৮ হাজার ৪০৬ জনে।
রোববার (২৭ জুন) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৭৫ ও নারী ৪৪ জন। মৃত ১১৯ জনের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯৯, বেসরকারি হাসপাতালে ১৪, বাসায় ৪ এবং হাসপাতালে আনার পথে ২ জন মারা যান।
এতে আরো বলা হয়, একই সময়ে সরকারি ও বেসরকারি ৫৫৪টি ল্যাবরেটরিতে ২৪ হাজার ৬২৮টি নমুনা সংগ্রহ ও ২৪ হাজার ৪০০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৫ লাখ ৬ হাজার ৭৮১টি।নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৩ হাজার ২৪৯ জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা ৮ লাখ ৪ হাজার ১০৩ জন। সুস্থতার হার ৯০ দশমিক ৫১ শতাংশ।মৃত ১১৯ জনের মধ্যে বিশোর্ধ্ব ৬, ত্রিশোর্ধ্ব ৯, চল্লিশোর্ধ্ব ১১, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৩৪ এবং ষাটোর্ধ্ব ৫৯ জন মারা যান।
বিভাগওয়ারি হিসেবে দেখা গেছে, ঢাকায় ২৪, চট্টগ্রামে ২২, রাজশাহীতে ২২, খুলনায় ৩২, বরিশালে ২,সিলেটে ৫, রংপুরে ৯ এবং ময়মনসিংহে ৩ জনের মৃত্যু হয়।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতে করোনাভাইরাসের প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে।
এর মধ্যে গত ১৬ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান।
গত ২৪ ঘণ্টায় আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯৪ জনের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ হয়েছে ১৫ জনের। এছাড়া হাসপাতালটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন একজন।
প্রসঙ্গত, কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের সম্পূর্ণ পৃথক চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এমনকি দুটি বিভাগের চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মরত প্রত্যেকের আলাদা থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। করোনা চিকিৎসা ছাড়া অন্য সকল চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম আগের মতই চলমান রয়েছে।