মিজানুর রহমানঃ
মানিকগঞ্জে বর্তমান করোনা পরিস্থিতি, আসন্ন ঈদুল আযহা, বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গন রোধ, প্রধামন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরসহ সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ।
রবিবার (১১ জুলাই) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলার সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনা লায়লাকে জড়িয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় অসত্য সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদ জানান জেলা এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন।
এসময় উপস্থিত সাংবাদিকদের এ বিষয়ে একটি লিখিত প্রেস নোট পড়ে শোনান সংগঠনের সভাপতি জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ ।
প্রেস নোটে জেলা প্রশাসক আব্দুল লতিফ বলেন, সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনা লায়লার মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়ে সম্প্রতি দৈনিক ইত্তেফাক ও ভোরের কাগজসহ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে “ইউএনওর উপস্থিতিতে ব্যবসায়ীকে মারধর” “ইউএনওকে স্যার না বলায় ব্যবসায়ীকে মারধর” “ইউএনওকে আপা বলায় ব্যবসায়ীকে লাঠিপেটা” “সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনা লায়লাকে স্যার না বলে আপা বলায় এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে আহত” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, মহামারী করোনাকালীন বর্তমান সরকারের ঘোষিত চলমান আরোপিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সিঙ্গাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) রুনা লায়লা কর্তৃক গত ৮ জুলাই সিঙ্গাইর পৌরসভা, সিঙ্গাইর বাসষ্ট্যান্ড, জয়মন্টপ বাজার, রায়দক্ষিন বাজার, জায়গীর বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
এসময় ৩ ব্যক্তিকে লকডাউন উপেক্ষা করে জুয়েলারী দোকানে গহনা তৈরীর উদ্দেশ্যে আসায় দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তপন চন্দ্র পাল, পিতা গৌড় চন্দ্র পাল, গ্রাম: জয়মন্টপ, সিঙ্গাইর, মানিকগঞ্জের কঠোর লকডাউনে জুয়েলারী দোকান খোলা রাখায় এবং তার দোকানে ৯ জন ব্যক্তি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবস্থান করায় তাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হলে বর্নিত ব্যক্তি জরিমানার অর্থ পরিশোধ করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
পরবর্তীতে সরকারি আইন না মানায় ও সরকারি কাজে অসহযোগিতা করায় আইন-শৃঙখলা বাহিনীর সদস্য কর্তৃক তাকে কঠোরভাবে সর্তক করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা কর্তৃক কিংবা তার নির্দেশে লাঠিচার্জ কিংবা লাঠি দিয়ে আঘাত করার মত কোন ঘটনা ঘটেনি। বর্ণিত বিষয়ে কথিত ভিকটিম তপন চন্দ্র পাল, সিঙ্গাইর উপজেলা চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নানের নিকট উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নির্দেশে লাঠিজার্চ কিংবা লাঠি দিয়ে আঘাত করার মত কোন ঘটনা ঘটেনি মর্মে স্বাকীরোক্তিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন।
সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা জীবনের ঝুকি নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করছেন এবং জনগণের স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছেন। একটি স্বার্থন্বেসী মহল উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে ব্যক্তি স্বার্ত চরিতার্থ করার লক্ষ্যে অসত্য সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে। ফলে সরকারের চলমান লকডাউন বাস্তবায়নে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এরুপ চলতে থাকলে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দায়িত্বপালনে মনোবল হ্রাস পাবে বিধায় একান্ত বাধ্য হয়েই এই প্রেস রিলিজ।
সেই সাথে বাংলাদেশ এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশন,মানিকগঞ্জ জেলা শাখার পক্ষ থেকে ইউএনও কে নিয়ে প্রকাশিত সব অসত্য সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এসময় স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক (উপসচিব) মুহাম্মদ সফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) (উপসচিব) মো: মনিরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু, সাধারন সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী, জেলা সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস, সহসভাপতি আহম্মেদ সাব্বির সোহেল, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মিহির, জেলা সাংবাদিক সমিতির সহ সভাপতি কাবুল উদ্দিন খানসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।