ত্যাগের মহিমায় সারা দেশে করোনা মহামারির মধ্যে আজ বুধবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন হচ্ছে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজের জামাত শেষে করোনা মহামারি থেকে মুক্তি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। এ সময় মুসল্লিরা দুচোখের পানি ফেলে মহান আল্লাহতায়ালার কাছে দোয়া করেন।নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে জাতির কল্যাণ কামনা, করোনার সংক্রমণ ও রোগ থেকে মুক্তির জন্য মোনাজাত করা হয়।
ঈদের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে ছিলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. আতাউর রহমান।
ঈদের জামাত শেষে বিশেষ দোয়া ও মুনাজাতে মুফতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘হে আল্লাহ আপনি আমাদের সব মুসলিম উম্মাহকে মাফ করে দিন। বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহকে হেফাজত করুন। বিশ্বমানবতাকে রক্ষা করুন। হে আল্লাহ, কঠিন এ করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে আমাদের সবাইকে রক্ষা করুন মাওলা। আপনার খাস রহমত নাজিল করুন।’
মোনাজাতে করোনা মহামারি থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বে স্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চান ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। এ সময়‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় জাতীয় মসজিদ।
জাতীয় মসজিদে প্রথম জামাতে অংশ নেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. মুশফিকুর রহমান।
এ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজের পর বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতে করোনা মহামারি থেকে মুক্তি এবং মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
গত বছর থেকে মহামারির এ সময়ে এটি চতুর্থ ঈদ। তবে এবার কোরবানির ঈদে করোনা সংক্রমণের সবচেয়ে কঠিন সময়টি পার করছে বাংলাদেশ।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়তে আসা আব্দুল জব্বার নামের এক মুসল্লি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বে পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এর মধ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি খারাপ সময় পার করছে। তাই নামাজে আল্লাহর কাছে পিতা-মাতা দেশবাসীর জন্য দোয়া করেছি।’
আবুল হোসাইন নামের আরেক মুসল্লি বলেন, ‘আগে জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়তাম। কিন্তু করোনার কারণে এখন সেই অবস্থা নেই। তাই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নামাজ পড়লাম, তাতেই ভালো লাগছে। নামাজ পড়ে করোনা থেকে মুক্তির জন্য দোয়া করেছি।’
সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাতে অংশ নেওয়া ও উদ্যাপনের জন্য বলা হয়েছে। মসজিদে মসজিদে দূরত্ব মেনেই নামাজে অংশ নিয়েছেন মুসল্লিরা। অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল। আবার মাস্ক পরেননি এমন মানুষের সংখ্যাও কম নয়। তবে নামাজের পর কোলাকুলি করতে দেখা যায়নি। কেউ কেউহাত মিলিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
এদিকে, সকাল থেকে ঢাকার রাস্তার গলিতে-গলিতে পশু কোরবানি হচ্ছে। তবে ঈদে নতুন জামাকাপড় পরে মানুষকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তেমন বের হতে দেখা যায়নি। হাতিরঝিল ও ধানমণ্ডির মতো অল্প কিছু এলাকায় কিছু শিশুকে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা গেছে।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৭টায়। এই মসজিদে মোট পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। করোনা মহামারির কারণে এবারও জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত হয়নি।