তাহসানুর রহঃশাহজামালঃ
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গ্রামীণ সড়ক জীবননগর-কালীগঞ্জ-ভায়া জীবননগর মহাসড়কের বাঁকা সংযোগ সড়কটি যুগ যুগ ধরে বেহাল অবস্থায় থাকলে তা উন্নয়নে কারো নজর নেই। ফলে বিশাল বাঁকাসহ আশেপাশের চারটি গ্রামের মানুষকে চরম ভোগান্তির মধ্যদিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
বর্ষা মওসুমে হাটু পানি ও শুকনা মওসুমে ধুলা-বালুর মধ্যে চলাচল করতে হয় এলাকাবাসীকে। বর্ষা মওসুমে এলাকাবাসীকে দুই-তিন কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে মুল সড়কে উঠতে হয়। গ্রামবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,সব জায়গায় উন্নয়ন হলেও বাঁকার উন্নয়ন হবে না।কারণ এ গ্রামে নেতা বেশী হলেও উন্নয়ন হয় না।
বাঁকাপুর্ব পাড়ার খালেক বিশ^াসের দোকান থেকে জীবননগর-কালীগঞ্জ মহাসড়ক পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার রাস্তার কিছু অংশ সোলিং এবং কিছু অংশ কাঁচা হওয়ায় বর্ষা মওসুমে এলাকাবাসীকে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হয়।
রাস্তা মওসুমে দেড় কিলোমিটার রাস্তার জন্য এলাকাবাসীকে ২-৩ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে যেতে হয়। এ রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন খুব বেশী চলাচল না করলেও বর্ষা মওসুমে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে থাকার ফলে তা দেখে বুঝার উপায় নেই যে তা রাস্তা নাকি অন্য সরু খাল। বর্ষা মওসুমে পানি জমে থাকায় হাঁস চরে বেড়াতে দেখা যায়।
বাঁকা গ্রামের আব্দুল গনি,শফিকুল ইসলাম শফিক,ওমর ফারুক ও সবুর খান বলেন,সামান্য বৃষ্টির পানিতেই রাস্তাটি তলিয়ে গিয়ে বিপদজনক হয়ে ওঠে।
রাস্তায় দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারণে পশর্^বর্তী অনেক বাড়ী ঘর ধসে পড়ে যায়। রাস্তায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় পানি জমে যাওয়ায় আতঙ্কের মধ্যে
চলাচল করতে এলাকাবাসীকে। তারা আরো বলেন, দেশ স্বাধীনের পর অনেক জায়গায় রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হলেও রহস্যজনক কারণে আমাদের এই জনগুরুত্বপুর্ণ রাস্তাটির কোন উন্নয়ন হয়নি।
আমাদের গ্রামে সব রাজনৈতিক দলেরই ছোট বড় নেতার অভাব নেই। কিন্তু এলাকা ররাস্তাঘাটের কোন উন্নয়ন তারা করতে পারিনি। এ যেন আলোর নিচে অন্ধকার।
গ্রামবাসীর দাবী রাস্তার উন্নয়নের জন্য ওই রাস্তা দিয়ে বর্তমান এমপি সাহেবকে হাঁটিয়ে নিয়ে রাস্তার বেহাল অবস্থা দেখিয়েছি। তিনি বার বার
প্রতিশ্রæতি দিলেও এখনও পর্যন্ত রাস্তাটির উন্নয়নে কোন সাড়া মেলেনি।দেড় কিলোমিটার রাস্তার বহু স্থানে গর্ত ও পানি জমে থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা
ঘটে থাকে। সড়কটি বেহাল দশার কারণে এলাকার কৃষকদের মাঠের ফসল তুলতে চর মদুর্ভোগের শিকার হতে হয়। বাঁকা গ্রামটি একটি কৃষি সমৃদ্ধ গ্রাম। এখনও এ গ্রামের ৮৫ ভাগ মানুষ কৃষির সাথে জড়িত। রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে
বর্ষা মওসুমে কৃষকদের উৎপাদিত ফসল এবং অসুস্থ্য রোগী সাধারন ও গর্ভবতী
নারীদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ রাস্তায় এলাকাবাসীকে সব সময় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। এমন ভোগান্তি থেকে এলাকাবাসী পরিত্রাণ চায়।
এ ব্যাপারে বাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান বলেন,আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাস্তাটি উন্নয়নের জন্য এলজিইডি অফিসসহ
উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার আলোচনা করেছি। কিন্তু কোন সাড়া মেলেনি। রাস্তাটি অনেক বড় রাস্তা,ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দ দিয়ে ওই রাস্তা
করা সম্ভব নয়। রাস্তাটি যাতে দ্রæত পিচকরনের কাজ হয় সে ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি হাজী আলী আজগার টগর সাহেব কথা দিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন,সড়কটি এলাকার জন্য একটি জনগুরুত্বপুর্ণ সড়ক। রাস্তাটি সংস্কার করা হলে এলাকাবাসীর
জীবনমানের উন্নয়ন হবে। তা ছাড়া অনেক দুরত্বও কমে আসবে। আমার জানামতে রাস্তার উন্নয়ন কাজ আগামী অর্থ বছরের মধ্যে শুরু হবে।