নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইল জেলার এক সমভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন খ্যাতিমান সুরকার, গীতিকার, সংগীত শিল্পী ও বিশিষ্ট সাংবাদিক সালাউদ্দিন বাদল। বাবা প্রয়াত আলাউদ্দিন আহম্মেদ ছিলেন সৎ ও কর্তব্য পরায়ণ সরকারী কর্মকর্তা। মা প্রয়াত সুফিয়া আহম্মেদ ছিলেন সু-গৃহিনী ও সঙ্গীতানুরাগী। বাবার চাকুরীর বদলীর সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় কেটেছে তার শৈশব। ছোটবেলা থেকেই গানের প্রতি ছিল তার প্রবল আগ্রহ।
সঙ্গীত যার রক্তের সাথে মিশে আছে, সঙ্গীত ছাড়া যিনি বেঁচে থাকার কথা এক মূহূর্তও ভাবতে পারেন না। যার সুরের মুর্ছনায় সবাই আচ্ছন হয়ে যায়। বিরহের গান গেয়ে যিনি বন্ধুদের কাছে পরিচিত “বাদল বিরোহী” বলে। আজ ৫ আগষ্ট সেই গুনি মানুষ সালাউদ্দিন বাদল এর শুভ জন্মদিন।
সঙ্গীতের প্রতি একাগ্র ভালবাসা আজ তাকে নিয়ে এসেছে অন্যন্য উচ্চতায়। সঙ্গীতে হাতে খড়ি প্রয়াত ওস্তাদ কবির উদ্দিন, ফরহাদ হোসেন ও ওস্তাদ ইব্রাহিম হোসেন এর কাছে। দীর্ঘদিন সঙ্গীতকে বুকে লালন করে বেচেঁ থাকা এ মানুষটি কোন এক অজানা অভিমানে ২০০২ সালের পর দীর্ঘ সময় সঙ্গীত থেকে নিজেকে গুটিয়ে রাখেন। অবশেষে দীর্ঘ বিরতির পর এ মানুষটি ফিরলেন তার সুরের যাদু নিয়ে। এসেই বেশ কয়েকটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে গান গেয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেন।
সঙ্গীতকে তিনি কখনোই পেশা হিসেবে নেন নি। সঙ্গীত তার জীবনে কেবলই ভাললাগা ও ভালবাসার। আড্ডাবাজ এই মানুষটির বেশীরভাগ অসবর সময় কাটে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে, বই পড়ে আর গান শুনে। তার প্রিয় শিল্পীর তালিকায় রয়েছেন ফাতেমা তুজ জহুরা, প্রয়াত নিলুফার ইয়াসমিন, সুবীর নন্দী ও নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী। ওপার বাংলার মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর গান তার খুবই প্রিয়।
প্রিয় শিল্পীর পছন্দের খাবার তালিকায় রয়েছে, হাসের মাংস, মুড়ি গরুর মাংস, ভুনা খিচুরী, আলু ভর্তা, সাদা ভাত ও ছোট মাছ, গরুর নেহারী ও লৈট্টা শুটকি এবং পাতলা ডাউল।
সংসার জীবনে স্ত্রী মিনু আহম্মেদ ও একমাত্র মেয়ে ফারিয়া তাসবিহ অবন্তি’কে নিয়ে সুখেই কাটছে তার সংসার জীবন। স্ত্রী মিনু আহম্মেদ শাহীন ক্যাডেট কলেজের শিক্ষিকা এবং একমাত্র মেয়ে মেধার স্বাক্ষর রেখে এবার গোল্ডেন প্লাস পেয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় উর্তীর্ণ হয়েছে।
গুণি এই শিল্পী ও সাংবাদিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তাকে নিয়ে জাতীয় জাদুঘরে আয়োজিত হয়েছিল একক সঙ্গীত সন্ধ্যা। সেখানেও তিনি হারানো দিনের গান পরিবেশন করে তার ভক্তদের হৃদয়ের মনিকোঠায় আরো বেশী জায়গা করে নিয়েছিলেন। জাদুঘরের সেই সঙ্গীতায়োজনে মুগ্ধ হয়েছিলেন অনেকেই। সালাউদ্দিন বাদল সম্পর্কে সেই অনুষ্ঠানের খ্যাতিমান সুরকার মিল্টন খন্দকার বলেছিলেন আমরা যদি বাদলকে সঠিক ভাবে দিকনির্দেশনা দিতে পারি তাহলে সে দেশের শীর্ষ সঙ্গীত শিল্পীদের একজন হবে। আর এক কিংবদন্তী নজরুল সঙ্গীত শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহুরা বলেন, ভাল শিল্পী হতে চাইলে বিনয়ী ও ভাল মানুষ হতে হবে। আর বাদলের সেই গুনটা রয়েছে।
সুর পাগল এ মানুষটির আর একটি নেশা হচ্ছে সাংবাদিকতা। পেশাগত জীবনে তিনি প্রথম সাংবাদিকতা শুরু করেন নিজ জেলা টাঙ্গাইলের জনপ্রিয় “দৈনিক লোক কথা” ও “দেশ কথা” পত্রিকার কাজের মধ্যে দিয়ে। এর পর তিনি যোগ দেন “দৈনিক ইনকিলাব” পত্রিকায়, এর পর ইসলামিক টিভি দিয়ে যাত্রা শুরু করেন টেলিভিশন সাংবাদিকতায়। একটানা দীর্ঘদিন সিনিয়র সাংবাদিক হিসাবে সুনামের সাথে নিজের দ্বায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি জনপ্রিয় বেসরকারী টিভি চ্যানেল “বাংলা টিভি”র সিনিয়র জয়েন্ট নিউজ এডিটর এবং ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক ইনচার্জ হিসাবে অতিব সুনামের সাথে কর্মরত রয়েছেন। গুনি এই মানুষটির জন্মদিনে দেশ এবং দেশের বাহিরে থেকে অগনিত ভক্তরা জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সালাউদ্দিন বাদল বলেন, সমাজের অসহায় এবং নিপিড়ীত মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে নিজেকে সার্থক মনে করবো। এসময় তিনি দেশবাসী সহ যারা বিভিন্ন মাধ্যমে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাদের এবং বাংলা টিভির সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ধন্যবাদ জানাতেও ভুল করেন নি।