সরকারের ঘোষিত সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা যাতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা নির্বিঘ্নে নিতে পারেন- সেই লক্ষ্যে তাদেরকে একটি ডিজিটাল সনদ, পরিচয়পত্র ও মেডেল দেওয়ার সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
বুধবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়। কমিটির সভাপতি শাজাহান খান এতে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকে মুক্তিযোদ্ধা পদক নীতিমালা ২০২১, রাজধানী সুপার মার্কেটের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের বোর্ড সভায় আলোচিত অপ্রয়োজনীয় ও অব্যবহৃত জমিগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়।
মুক্তিযোদ্ধা পদক নীতিমালা, ২০২১ অনুযায়ী যোগ্য ব্যক্তি/সংস্থা/প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়কে নির্ধারিত পদক সংখ্যা আরও বাড়ানোর জন্য সুপারিশ করে সংসদীয় কমিটি।
এছাড়া সব মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স অফিসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উঠানামার কষ্ট লাঘব করতে মন্ত্রণালয়কে কমপ্লেক্সে লিফট/ক্যাপসুল লিফট স্থাপনের জন্য বলা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মো. শাজাহান খান বলেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধ পদকের জন্য সাতটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করেছে। আমরা এই সংখ্যাটা বাড়াতে বলেছি। তিনি জানান, ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে যাতে পদক দেওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে বলেছে কমিটি।
গত ৯ আগাস্ট মুক্তিযুদ্ধ পদকের কথা জানায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং চেতনা বিকাশে ব্যক্তি ও সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকাকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সম্মানিত করতে ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ চালু করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
সাতটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য দেওয়া হবে এই পুরস্কার। এগুলো হচ্ছে- স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে সংগঠনে ভূমিকা, সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন, মুক্তিযুদ্ধ/স্বাধীনতা বিষয়ক সাহিত্য রচনা, মুক্তিযুদ্ধ-ভিত্তিক চলচ্চিত্র/তথ্যচিত্র/নাটক নির্মাণ/সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বিষয়ক গবেষণা এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ।
এছাড়াও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোনো ক্ষেত্রে এ পদক দেওয়া হবে। প্রতি বছর ১৫ ডিসেম্বর ‘মুক্তিযুদ্ধ পদক’ আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া হবে। পদকপ্রাপ্তদের ১৮ ক্যারেট মানের ২৫ গ্রাম সোনার পদকের সঙ্গে একটি রেপ্লিকা এবং দুই লাখ টাকা দেওয়া হবে।
বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, এ বি তাজুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ এবং ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল অংশ নেন।