মিজানুর রহমান, সিংগাইর:
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে জামশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিঠুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গর্ভপাত ঘটানোর মামলা করেছে ২য় স্ত্রী। রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অসৎ উদ্ধেশ্যে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি চেয়ারম্যান সমর্থকদের। পাশাপাশি মামলার অধিকাংশ স্বাক্ষীরা চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক দলীয় প্রতিপক্ষ বলে জানা যায়।
গত ৫ সেপ্টেম্বর রোববার মানিকগঞ্জ বিজ্ঞ আদালতের শিশু ও নারী নির্যাতন দমন অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলাটি দায়ের করেন দক্ষিণ জামশা গ্রামের কোহিনুর ইসলামের মেয়ে বৃষ্টি আক্তার ওরফে রূপালী আক্তার(২১)। আদালতের মিস পিটিশন মামলা নং ১৬৩/২০২১।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২০ জুলাই উপজেলার জামশা ইউনিয়নের দক্ষিণ জামশা গ্রামের আমিনূল হকের পুত্র ও জামশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানূর রহমান মিঠুর সাথে একই গ্রামের কোহিনূরের একাধিক স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে বৃষ্টি আক্তার ওরফে রুপালী (২১) এর ১ লক্ষ টাকা মোহরানা ধার্য করে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর হতে মিঠু ঐ স্ত্রীর সাথে সহবাস ও ভরণ-পোষণ করে আসছিল।
তার নির্বাচনকে সামনে রেখে হঠাৎ ঐ স্ত্রী আদালতে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা ঠুঁকে দেয়। মামলার এজাহারে ধর্ষণ ও গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ আনা হয়। যা নিয়ে এলাকায় ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে।
এব্যাপারে জামশা ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ দুলাল মিয়া, আব্দুল মান্নান, রতন বিশ্বাসসহ স্থানীয়রা বলেন, চেয়্যারম্যান মিজানুর রহমান মিঠু ও বৃষ্টি আক্তার ওরফে রুপালী আক্তার বৈধভাবে বিবাহ করে বসবাস ও ভরণপোষণ করে আসছিলেন।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জামশা বাজারের আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন যাবত আফজাল মাস্টার ও চেয়্যারম্যান পক্ষের সাথে বিরোধিতা চলছিলো। চেয়ারম্যান পক্ষের দাবি আফজাল মাস্টারসহ অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়া ইউনিয়ন যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মোঃ ওবাইদুর রহমান সাদ্দাম গংরা বংশীয় লাঠিয়াল বাহিনী দ্বারা বাজারে দীর্ঘদিন যাবত লুটপাট ও আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ সাহস পায় না।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিঠু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাতেই কাল তাদের কাল হয়ে দাঁড়ায় চেয়্যারম্যান মিঠু। চেয়ারম্যানকে রোধ করতে নৌকা প্রতিক প্রত্যাশী অন্যান্ন প্রার্থীদের সাথে সন্ধি করে চেয়ারম্যানের যশ খ্যাতি খর্ব করতে তার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ চক্রান্ত শুরু করে। এরই ফল স্বরূপ চেয়ারম্যানের দ্বিতীয় স্ত্রীকে দিয়ে ধর্ষণ ও গর্ভপাত ঘটানোর মিথ্যা মামলার নাটক সাজায়।
এ বিষয়ে জানতে মামলার বাদী বৃষ্টি আক্তার ওরফে রূপালী আক্তারের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। সাংবাদিক পরিচয়ে জানতে চাইলে তার মা কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, আমি এবিষয়ে কিছুই বলতে পারবো না, আমার মেয়েই বলতে পারবে। সে এখন বাসায় নেই।
সিংগাইর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট্য আইনজীবী লুৎফর রহমান এবিষয়ে বলেন, একটি ধর্ষণ মামলায় ৩৭ জন স্বাক্ষী। যা আমাদের অবাক করে।স্বাক্ষীদের বেশিরভাগই নৌকা প্রতীক প্রত্যাশী চেয়্যারম্যান প্রার্থী। এটা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার অসৎ উদ্ধেশ্যে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে তা বুঝা যায়।
চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিঠু জানান, সে আমার ২য় স্ত্রী, স্ত্রীর সাথে বৈধ মেলামেশা করা যায়, বৈধ মেলামেশা ধর্ষণ বলে আখ্যায়িত করা যায় কি? আর কোন স্বামীই নিজ স্ত্রীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করে না। আমি দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে শঙ্কিত আছি। ওর শারীরিক ক্ষতি সাধন করে ষড়যন্ত্র কারীরা আমার উপর দায় ফেলতে পারে।