জবি প্রতিনিধি
চলতি বছরের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের আটকে থাকা সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। সশরীরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরীক্ষার দিনগুলোতেই শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বাসগুলো চলবে। তবে সব বিভাগের পরীক্ষার সময়সূচি না পাওয়ায় বাসের সিডিউল তৈরিতে সময় লাগছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহণ প্রশাসনের।
রবিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ প্রশাসক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ এসব তথ্য জানান।অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাসুদ জানান, ‘শুধুমাত্র পরীক্ষার দিনগুলিতেই চলবে পরিবহণ। উদ্দেশ্য যেহেতু পরীক্ষা নেওয়া, তাই এ সিদ্ধান্ত।’
বাসের সিডিউল প্রস্তুতির বিষয়ে পরিবহণ প্রশাসক বলেন, ‘পরীক্ষার সময়সূচি চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাসের সিডিউল প্রস্তুত করা যাচ্ছে না। সব বিভাগের চেয়ারম্যানদের কাছে রুটিন চাওয়া হয়েছে এখন সব বিভাগ থেকে রুটিন না এলে পরে সিডিউল বিপর্যয় হবে। এখন আবার কিছু বিভাগ পরীক্ষার রুটিন পুনরায় সংশোধন করছে। তাই নিশ্চিতভাবে পরীক্ষার রুটিনগুলো পাওয়ার আগে বাসের সিডিউল প্রস্তুত করা যাচ্ছে না।’
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের সঙ্গে ডিন ও চেয়ারম্যানদের একটি বৈঠকে বিভিন্ন বর্ষের আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা আগামী ৭ অক্টোবর থেকে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যদি সার্বিক পরিস্থিতির কারণে সশরীরে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব না হয়, তবে অনলাইনে পরীক্ষা নেয়া হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
পরীক্ষার তারিখ ঘোষণার পর পরই বিভিন্ন অনুষদের ডিন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের চেয়ারম্যানদের পরীক্ষা নেয়ার জন্য রুটিন দেয়ার নির্দেশ দেয়। এতে করে বিভিন্ন বিভাগ সময়সূচি ঘোষণার সঙ্গে রুটিনও প্রকাশ করতে থাকে। তবে পরীক্ষার রুটিন দেয়ার পর পরই দেখা যায় পূজার ছুটিতেও কিছু বিভাগের পরীক্ষার তারিখ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানান বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে অনুষ্ঠিত ডিনস কমিটির এক সভায় ৭ অক্টোবরের আগে এবং পূজার সময় ১১-১৬ অক্টোবর কোনো সেমিস্টার পরীক্ষা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সশরীরে পরীক্ষা নেয়ার নতুন এ সিদ্ধান্তের পর অনেক বিভাগেরই রুটিন পরিবর্তন করতে হয়েছে। তবে এখনও সব ডিপার্টমেন্ট রুটিন না দেয়ায় এবং বেশ কয়েকটি বিভাগের রুটিন পরিবর্তন না করায় বাস সিডিউল তৈরি করতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ পুল। এতে দ্বিধা দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
নরসিংদী থেকে নিয়মিত ক্লাস করা তামান্না আক্তার বলেন, পরীক্ষা ৭ তারিখ থেকে শুরু হলে বাস কবে থেকে চালু হবে আর কখন চালু হবে। এখন ও না জানালে আমাদের বিকল্প ব্যবস্থা তো নিতে হবে।
মুন্সিগঞ্জ থেকে এসে ক্লাস করা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মেহনাজ ফাহিম বলেন, শুনেছি পরীক্ষার সময় বাস চলবে। কিন্তু কবে থেকে আর কখন চলবে প্রশাসন এখনও কিছু জানায় নি। এমনকি কোনো বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেনি। বাস না পেলে পরে যদি পরীক্ষা মিস হয় তাহলে এর দায়ভার কে নিবে?
এছাড়াও ঢাকার মধ্যে বাস গুলো দুই শিফট করার ও দাবি জানাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ও বিআরটিসির ভাড়া করা বাসে শিক্ষার্থী ঢাকা ও ঢাকার আশেপাশের চারটি জেলায় (নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ ও কুমিল্লা) যাতায়াত করে। অভিযোগ আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে বিআরটিসির পুরনো ও রিপেয়ার করা বাস গুলো দেয়া হয়। এতে প্রায়ই রাস্তায় বাস নষ্ট, চাকায় আগুন লেগে যাওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে।
বাস সিডিউল প্রকাশের পর বাস গুলোর জনবল, গাড়ির সচলতা ইত্যাদি বিষয় তদারকি করে রুটে বাস চলাচল করবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ পুল।