জিয়াউদ্দিন বাবলুর মৃত্যুর পর জাতীয় পার্টির নতুন মহাসচিবের পদ নিয়ে লড়াই ও নেতাকর্মীদের জল্পনা-কল্পনা যখন তুঙ্গে তখন এক তরুণ নেতার নাম উঠে এসেছে। শোনা যাচ্ছে গাইবান্ধা-১ আসনের এমপি ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে নতুন মহাসচিব করতে যাচ্ছেন দলটির চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারম্যান তার মনোনীত ব্যক্তিকে মহাসচিব পদে নিয়োগ দিতে পারেন। সেক্ষেত্রে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের হাতেই রয়েছে সর্বোচ্চ ক্ষমতা।
তবে সিনিয়রদের বাদ দিয়ে ব্যারিস্টার শামীমকে মহাসচিব করা হলে তা মানতে নারাজ কাজী ফিরোজ রশিদসহ দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের অনেকেই।
এই নেতাকে মহাসচিব করার গুঞ্জনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দলটির সিনিয়র নেতারা। এ নিয়ে বিদ্রোহের হুমকিও দিয়েছেন তারা। খবরটি শোনার পর গত সোমবার রাতেই দলের ডজনখানেক সিনিয়র নেতা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেছিলেন বলে জানা গেছে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিবের চেয়ারের দিকে মসিউর রহমান রাঙ্গা, রুহুল আমিন হাওলাদার, নূর হোসেন বাবলাসহ আরও কয়েজকন তাকিয়ে থাকলেও তোলপাড় চলছে অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারিকে ঘিরে।
এদিকে নতুন মহাসচিব ইস্যুতে কথা বলার জন্য জিএম কাদের ও ব্যারিস্টার শামীমের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ বলেন, চেয়ারম্যান এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের মহাসচিব নিয়োগ দিলে বনানী ও কাকরাইল কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে সারাদেশে দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের ও শামীম হায়দার পাটোয়ারীর কুশপুত্তলিকা জ্বালানো হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, জিএম কাদেরের সিদ্ধান্ত আমরা মানব না। দলে অনেক ত্যাগী শীর্ষ নেতা রয়েছেন। তাদের পাশ কাটিয়ে শামীম পাটোয়ারীকে দলের মহাসচিব নিয়োগ দিলে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে।
দলটির এক শীর্ষ নেতা বলেন, জাতীয় পার্টি অগ্নিপরীক্ষার সম্মুখীন। জিএম কাদের এবং শামীম পাটোয়ারীর এই দলের জন্য কী অবদান আছে? আমরা যারা দলের জন্য জেল খেটেছি, নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এক সময় আমাদের বাড়িঘরও লুট হয়েছে। জিএম কাদের হয়তো সব ভুলে গেছেন। কারণ জাতীয় পার্টির দুর্দিনে তিনি কখনোই মাঠে-ঘাটে ছিলেন না। তিনি চেয়ারম্যান হওয়ার পর পার্টিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছেন।
জাতীয় পার্টির কাকরাইলের কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন একাধিক নেতা বলেন, মহাসচিবের পদ নিয়ে বিরোধে জিএম কাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করলে দলে ভাঙ্গন দেখা দিতে পারে।