শরৎ মানেই কাশফুল, সাদা হাসি। শরৎ মানেই ঢাকের আওয়াজ। পূজার আনন্দ বার্তা। দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আগমন। বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গোৎসব। মহালয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে মা দুর্গার বরণ বা পূজার উৎসব। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ-শিশু-বৃদ্ধ ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পূজার নানা আয়োজনে।
পূজা মানেই আনন্দ, পূজা মানেই উৎসব। উৎসব মানেই নতুন জামা কাপড় কেনাকাটার ধুম। উৎসবের সাজে নিজেকে সাজিয়ে তোলার, সবাইকে রাঙিয়ে তোলার নানা আয়োজন।
পূজার সাজ নিয়ে ব্যতিক্রম ফটোশুটের আয়োজন করেছে মীম সাবরীন ব্রাইডাল স্টুডিও। এ প্রসঙ্গে বিউটি ব্লগার ও বিউটিশিয়ান মীম সাবিহা সাবরীন বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা মানেই একটি উৎসবের বার্তা। আর উৎসব মানেই নতুন জামা-কাপড় কেনাকাটার ধুম। উৎসবের সাজে নিজেকে সাজিয়ে তোলার, সবাইকে রাঙিয়ে তোলার নানা আয়োজন চলে।
তিনি আরও বলেন, পূজার সাজে থাকে স্বর্ণের গহনার আধিপত্য। আবার পূজার দিন ভেদে জমকালো গর্জিয়াস সাজের পাশাপাশি থাকে সিম্পল ও ধর্মীয় কালার বাইডিংস সাজ। আমারা সিম্পল মেকআপ, পার্টি মেকআপ ও বার্ডেল মেকআপ দিয়ে মডেলদের সাজিয়েছি। স্বর্ণের গহনার পাশাপাশি ঢাকাই জামদানি, টাঙ্গাইল মসলিন জামদানি, টাঙ্গাইল হাফ সিল্ক জামদানি, দেশি ইক্কাত শাড়ি ও দেশীয় শাড়িতে পূজার উৎসবের আমেজ আনার চেষ্টা করেছি। এবারের পূজার সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী আর দশমীর বিশেষ জমকালো সাজ নিয়ে এই বিশেষ আয়োজন।
আগামীকাল ১১ অক্টোবর থেকে ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিক পর্ব। সপ্তমীর দিন থেকেই শুরু হয় নারী-পুরুষ-শিশুদের নিয়ে দল বেধে মন্ডপ পরিদর্শন। এ উপলক্ষে নতুন সাজ-সজ্জা, নতুন পোশাকে নিজেকে আরও মোহনীয় রূপে উপস্থাপন করতে চায় সবাই। এ দিনের উৎসবে যোগদিতে যে যার মতো সাজতে ভালোবাসে। রঙিন কাতান, জামদানি, সুতি, বুটিকের কাজসহ নানা রঙের শাড়ির বাহারি সাজের সুযোগ থাকে এ দিনে।
মীম সাবিহা সাবরীন আরও বলেন, অষ্টমীতে সাজ হয় খুব জমকালো। তবে অষ্টমীর দিনের পোশাকে লাল পাড় সাদা শাড়ি পড়ার ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা থাকায় এদিন বেশির ভাগ নারীর পোশাকে সাদা-লালের প্রাধান্য থাকে। এদিন অনেকে সুতি বা কাতানের লাল পাড় সাদা শাড়ি পড়লেও অনেকে আবার অফ হোয়াইটের সাথে লালের কাজ করা শাড়িসহ ভিন্ন রঙের শাড়ীও পড়ে থাকেন।
নবমীর সকাল শুরু হয় পূজার অঞ্জলী দিয়ে। এরপর সারাদিন ঘুরাঘুরি। এদিন পোশাক নির্বাচনে সবাই স্বাধীন। রঙের কোন বাধ্যবাধকতা নেই। নিজেদের ইচ্ছেমত নানা রঙের শাড়ি পড়েন সবাই। অনেকে সালোয়ার কামিজও পড়ে। এদিন সবাই সাধারণত সিম্পল সেজে থাকে।
আবার দশমীর সাজ মানেই ধর্মীয় বাধ্যবাধকতার সাদা আর লাল। মায়ের বিদায়-লগ্নে সিঁদুর খেলার সাথে তাল মিলিয়ে বাঙালির ললনারা সাজেন লাল সাদা ঐতিহ্যে। এদিন লাল পাড় সাদা শাড়ি ছাড়া পূজার সাজ একেবারেই অসম্পূর্ণ।
এছাড়া দশমীতে নারীর সাজের রয়েছে আলাদা বিশেষত্ব। এদিন সব নারীকে একপেচে শাড়ি পড়তে হয়। কপালে লাল টিপ, লাল চুড়ি, এলো খোপায় জড়ানো লাল জবা সব কিছুতেই দুর্গা পূজার দুর্গতিনাশিনীর রাজকীয়তার আবেদন প্রকাশ পায়। বাঙালি নারীর পরনে শাড়ির আবেদন চিরন্তন। তাই পূজার আয়োজনে আমরা দেশি শাড়িকে বিভিন্নভাবে আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছি।