আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়ন এর দক্ষিন শিমুলিয়ায় প্রভাবশালী ভূমি দস্যুদের থাবা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা এলাকার অনেক নিরিহ সংখ্যা লঘু সহ সাধারণ অসহায় পরিবার । ঐ সব অসহায় ভুক্তভুগীদের মধ্যে মাসুদ পারভেজ নামে একটি পরিবার সবাই ভুমিদস্যুদের থাবার সিকার হয়ে ভিটাবাড়ী হারাইয়া বর্তমানে অসহায়ের মত দাড়ে দাড়ে ঘুড়ছে ।অভিযোগ উঠেছে যুবদল নেতা মাসুদ পারভেজ এর পরিবারের-১৯৪ শতাংশ জমি দখল করে নিয়েছে ভুমিদস্যুরা ।
মাসুদ পারভেজ জানায়,সম্প্রতি তাদের ১৯৪ শতক জমিতে পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ করতে রড সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করে ৫২টি পিলার বসানো হয়েছিল। প্রভাবশালী ভুমিদস্যুরা সেই ৫’তলা ফাউন্ডেশন এর শিল্প প্রতিষ্ঠানটি নির্মানাধীন অবস্থায় জোর করে দখল করে নেয় এবং সকল পিলার গুলো মাটি ভরাট করে ঢেকে নতুন করে সেমি পাকা থাকার ঘর ও গরুর ফার্ম সহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করেছে প্রভাবশালীরা। দক্ষিণ শিমুলিয়া মৌজায় দখল করা ঐ জমিতে এখন হিজরা সম্প্রদায় বসবাস করছে ।
ভুক্তভোগী যুবদল নেতা মাসুদ পারভেজ আশুলিয়ার দক্ষিণ শিমুলিয়া এলাকার মৃত ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে । জানা গেছে আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শিমুলিয়া মৌজায় অবস্থিত। সিএস-৪৬৩,এস এ- ৬৪৫ এবং ৩১৯ খতিয়ান সিএস ও এস এ দাগ নং- ৩৩৯, ৪৩৭, ৫১৫, ৫১৭, ৫২৭ আর এস দাগ নং- ৪৫২, ৪৫৭, ৪৯৮, ৭৫১ ও ৮০৩ নং দাগে মোট জমির পরিমাণ- ১৯৪ শতাংশ। এস এ রেকর্ডীয় মালিকদের মধ্যে ঘরোয়া আপস বন্টনে নালিশি দাগের সম্পত্তি নিপেন্দ্র কুমার চক্রবর্তী গংরা প্রাপ্ত হয়ে ভোগদখলে থাকা অবস্থায় ০১/১০/ ১৯৭৩ ইং তারিখে তারা সাভার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের ১৮৮৮৬ নং দলিল মূলে ইব্রাহিম মিয়া গংদের কাছে বিক্রি করে দখল বুঝিয়ে দেন।
পরে এস এ রেকর্ড অনুযায়ী ইব্রাহিম মিয়া গংরা নিজ নিজ নামে নামজারিও জমি ভাগ করে খাজনা পরিশোধ করেন। এক স্ত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিন ও তিন ছেলে মাসুদ পারভেজ, আশিকুর রহমান (রাসেল) রিফাত জামান (সোহেল) ও এক মেয়ে আয়েশা সিদ্দীকাকে রেখে মৃত্যুবরণ করেন হাজী ইব্রাহীম মিয়া। ওই সম্পত্তি ২০২২ সালে খাজনা দিতে গেলে তা “ক” তফসিলে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে জানতে পারেন মাসুদ পারভেজ, এরপরেই ১৩/০৪/ ২০২২ ইং তারিখে তারা সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন মামলা নং- ৪৮৮০/২০২২ দায়ের করেন। সরেজমিনে দক্ষিণ শিমুলিয়া মৌজায় অবস্থিত ওই জমিতে গিয়ে দেখা যায়, পুরো জমি বাউন্ডারি ওয়াল দিয়ে ঘেরা।ওই জমি দখলে নিয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজন বসবাস করছে, বাউন্ডারির ভেতরে বেশ কয়েকটি ঘর করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাদের কয়েকজন জানান, ওই জমি তাদের দান করা হয়েছে, তবে কে বা কারা দান করেছে সে বিষয়ে সঠিক কোন উত্তর দিতে পারেনি তারা।
ভুক্তভোগী মাসুদ পারভেজ জানান, বাবার ক্রয় সূত্রে তারা জমির মালিক হয়ে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করে পুরো জমি শান্তিপূর্ণভাবেই ভোগ দখল করে আসছিলেন।কিন্তু রেবেকা নামে এক হিজড়া শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুরুজের নির্দেশে ওই জমির বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙ্গে ফেলে স্থাপনা নির্মাণ করেছে।
অথচ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন মামলার আদেশের আলোকে ওই জমিতে কোন প্রকার কাজ করা থেকে বিরত থাকার আদেশ জারি করা হয়।
এই আদেশ অমান্য করে বিগত ১০/০৩/ ২০২৩ ইং তারিখে বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে দিয়ে পুরো জমি দখল করে নিয়েছে ভূমিদস্যুরা।
বর্তমানে সেখানে হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজনকে পাহারাদার হিসেবে নিযুক্ত করে রাখা হয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী মাসুদ পারভেজ। বিষয়টি ঢাকা জেলা প্রশাসক ও সরকারি কমিশনার ভূমি (আশুলিয়া) সার্কেলকে লিখিতভাবে অবগত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মাসুদ পারভেজ আরো জানান, হিজড়া সম্প্রদায়ের লোকজন থাকায় তার জমিতে তিনি যেতে পারছেন না। শিমুলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আজাহারুল ইসলাম সুরুজ এর নেতৃত্বেঃ শিমুলিয়া ইউনিয়ন আওঃলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম,শিমুলিয়া মধ্যপাড়া গ্রামের শরিফ হোসেন জমিটি জোর করে দখল করে রেবেকা হিজরা ও বৃষ্টি হিজরাসহ হিজরা সম্প্রদায়কে বসবাস করাচ্ছেন । এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন মহোদয়দের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার (ওসি) এ এফ এম সায়েদ জানান, তিনি এই থানায় সবেমাত্র জয়েন করেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন, তবে কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ।