ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামাজিকভাবে বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছেন রাজ্যটির গভর্নর সিভি আনন্দ বোস। গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে পোস্ট করা এক ভিডিওতে তিনি এই ঘোষণা দেন।
বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উদ্ভুত পরিস্থিতির কথা তুলে বৃহস্পতিবার রাতে ভিডিও বার্তা দেন গভর্নর সিভি আনন্দ বোস। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি সামাজিকভাবে মুখ্যমন্ত্রীকে বয়কট করছি।’ কী এই সামাজিক বয়কট, গভর্নর তথা রাজ্যপাল সেটিও নিজের ৫ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সিভি আনন্দ বোসের বক্তব্য, ‘সামাজিক বয়কট মানে আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও পাবলিক প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে থাকব না।’ এদিনের ভিডিও বার্তায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের মুখে শোনা গেছে ‘লেডি ম্যাকবেথ’ প্রসঙ্গও। তিনি ক্ষোভ ঝেড়েছেন দিয়েছেন কলকাতার নগরপাল বিনীত গোয়েলকে নিয়েও। তার বক্তব্য, রাজভবনের পক্ষ থেকে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হলেও, তা করা হয়নি।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, রাজ্যপালের এই বক্তব্যের পর রাজ্য-রাজভবন বিতর্কই নয়, রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যেও একটা টানাপোড়েন সৃষ্টি হলো। যদিও এর আগে মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার রাজ্যপালের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ নিয়ে দ্বিধার কথা তুলে ধরেছেন প্রকাশ্যেই। মমতা বলেছিলেন, ‘তার রাজভবনে কেন সবাই যাবেন? রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি ঘটছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে, আমার কাছে অভিযোগ জানিয়েছে।’ এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও গত ১৫ অগস্ট চা-চক্রে রাজভবনে গেলেও গিয়েছিলেন ‘টিম’ নিয়ে। সেখানে বলেছিলেন, ‘আমি যখন এসেছি আমি বলেছিলাম আমার একা আসতে একটু প্রবলেম আছে। তাই আমি টিম নিয়ে আসব। আমরা কিন্তু একসঙ্গে ১০-১২ জন এসেছি। এটা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান বলে এসেছি।’ আর এবার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মুখে শোনা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে সামাজিক বয়কটের কথা। যদিও আনন্দ বোসের এই মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতা কুণাল ঘোষ।
তিনি বলেছেন, ‘রাজ্যপাল যা বলেছেন শুধু আপত্তিকরই নয়, সাংবিধানিকভাবেও ওই চেয়ারে বসে তিনি এ কথা বলতে পারেন না। উনি ওনার এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ অনবরত করে চলেছেন। এগুলো সীমালঙ্ঘন। রাজ্যপালের সমস্যা হলে উনি চলে যেতে পারেন।’ সূত্র : আনন্দবাজার, এনডিটিভি