সবুজে ছেয়ে গেছে ব্রম্মপুত্রের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। যেদিকে চোখ যায়, সেদিকে সবুজে ঘেরা ধান, পিয়াজ, মরিচ, বাদাম, মিষ্টি আলু, ধনিয়া, ভুট্রা, মিষ্টি লাউসহ শীত মৌসুমের বিভিন্ন জাতের সবুজে শ্যামলে সোনালী ফসলের ক্ষেত। এতে দুঃখ্য কষ্ট নাই ব্রম্মপুত্র চরাঞ্চলের মানুষের। কারন ব্রম্মপুত্রের বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলে যে পরিমান বিভিন্ন জাতের ফসলের চাষাবাদ হচ্ছে তাতে করে চরাঞ্চল এলাকার মানুষের জীবনমাত্রায় এসে যায় আমুল পরিবর্তন।
স্থানীয়রা জানান, রৌমারী ও রাজিবপুর উপজেলার পশ্চিাঞ্চল এবং চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার পুর্বাঞ্চল, ব্রম্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে এই অভাবনীয় পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে চরাঞ্চলিয় মানুষের সাহসিকতা ও বুদ্ধি। চরাঞ্চলে কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের সহযোগীতার কোন বালাই নাই। তেমন কোনদিন দেখা যায় না চরাঞ্চল ছাড়াও সমতল এলাকার কৃষকের সাথে তাদের কোন সু-পরামর্শ। অফিস, বাড়ি, হাট-বাজার ঘুরেই দিন, মাস পার। বাড়িতে বসে থেকেই মনগড়া ভাবেই বিভিন্ন রির্পোট দিয়ে থাকেন। কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ছাড়াই কৃষকদের নিজের বুদ্ধিতেই বাম্পার ফলন ফলাতে সক্ষম।
চরাঞ্চলের পলি মিশ্রিত বালু মাটিতে বিভিন্ন ধরনের ফসল ফলানো যায়। অল্প খরচেই অধিক ফলন হয়। চরাঞ্চলবাসীরাই সুফল ভোগ করছেন। ফসলের দাম ভালো পাওয়ায় চরের চাষিরা আগাম চাষে ব্যস্ত থাকে। যে কারনেই বন্যা, খড়া, ঝড় তুফান কিছু মনে না করে চর ছাড়ে না চরাঞ্চল মানুষ গুলো।
পালের চরের কৃষক মোসলেম উদ্দিন বলেন, এক একর জমিতে পিয়াজ, বাদাম, মরিচ চাষ করেছি। বীজ সার ও শ্রমিক মজুরি মিলে অতিরিক্ত খরচ হয় ১০/১৫ হাজার টাকা। কাটা মারাই শেষে বিক্রি করে আয় দেখা যায় ৫০/৬০ হাজার টাকা।
খেরুয়ারচর গ্রামের আবুল হায়াত বলেন, আমার জন্মের পর থেকে দেখছি বাপ দাদারা ১২/১৫ বার বাড়ি এপার ওপার সরাসরি করেছে। কিন্তু চর ছেড়ে কায়েমে যাওয়া হয় না। চরেই স্বল্প খরচেই বিভিন্ন জাতের সোনার ফসল পাওয়া যায়। একবার ভালো ফসল আনতে পারলে দুই বছরের ফসলের সমান অর্থ আসে। সে জন্য চরাঞ্চল ছেড়ে কায়েমে যাওয়া হয় না। বাংলায় একটি প্রবাদ রয়েছে, ভাতে মাছে বাঙ্গালী। চরে এমনটাই ঘটনা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কায়েম এলাকার চেয়ে চরাঞ্চলে অল্প খরচে বেশী ফলন হয়। যে কারনে চরাঞ্চলের কৃষকরা ভালো সুফল পাচ্ছে। তারা কায়েমে বাড়ি ঘর করতে চায় না। তাদেরকে সব সময় সু-পরামর্শ দিয়ে উন্নত জাতের ফসল ফলানো কথা বলা হয়।