দেশে-বিদেশে জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা ড. মিজানুর রহমান আজহারীর আগমনকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের পেকুয়ায় ধর্মপ্রাণ মানুষের অভূতপূর্ব সমাগম ঘটেছে। শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) পেকুয়ায় মরহুম মাওলানা শহিদ উল্লাহ স্মৃতি সংসদ ও পেকুয়া সমাজ উন্নয়ন পরিষদের যৌথ উদ্যোগে ৮ম ঐতিহাসিক তাফসিরুল কোরআন মাহফিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
সকাল থেকেই মাহফিলের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। সকাল ৯টা থেকে দেশের খ্যাতনামা ইসলামী স্কলারগণ বয়ান শুরু করেছেন। প্রথম পর্বে বয়ান করেছেন বিশিষ্ট আলেম শায়খ মুফতি কাজী ইব্রাহীম এবং শায়খ মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন। জুমার নামাজের খুতবা প্রদান করেছেন মাওলানা আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
মাহফিলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র্যাব-১৫, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নিরাপত্তা বিধানে মোতায়েন রয়েছেন। র্যাব-১৫ এর দুইটি সশস্ত্র ইউনিট এবং পুলিশের দুইটি মনিটরিং সেলসহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট মাহফিলের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে পেকুয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে তাঁর হেলিকপ্টার পেকুয়ায় অবতরণ করবে। তিনি রাত ৮টার দিকে তাফসীর বয়ান করবেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। মাহফিল কমিটির প্রধান উপদেষ্টা নিয়ামত উল্লাহ নিজামী জানিয়েছেন, এই মাহফিলে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের সমাগম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই মাহফিলে যোগ দিতে আসছেন। বিশেষ করে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষের ঢল নামছে।
মিজানুর রহমান আজহারী খুব অল্প সময়ে তার সুললিত কণ্ঠে কুরআন-হাদিসের সহজ-সাবলীল আলোচনার মাধ্যমে অসংখ্য মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি বাংলা, আরবি ও ইংরেজি ভাষায় সমান দক্ষতার সাথে বক্তব্য রাখতে পারেন, যা তাকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও জনপ্রিয় করে তুলেছে। ড. আজহারী মিশরের বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। পরবর্তীতে মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ‘হিউম্যান বিহ্যাভিয়ারেল ক্যারেক্টারইসটিক্স ইন দ্য হোলি কুরআন অ্যান্ড অ্যানালিটিক্যাল স্টাডি’ বিষয়ে পিএইচডি গবেষণা করছেন।
এই মাহফিল শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি বাংলাদেশের ইসলামি চিন্তাধারার একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মাহফিল কমিটির প্রধান উপদেষ্টা নিয়ামত উল্লাহ নিজামী পেকুয়ার ঐতিহাসিক বৃহত্তর তাফসীর মাহফিলে দেশবরেণ্য আলেম-ওলামাদের মিলনমেলায় সবার দোয়া ও শৃঙ্খলা রক্ষায় সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।