অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার না করা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ রাজনীতিতে ফিরতে পারবে না। তিনি বলেন, গণহত্যা সমর্থনকারী আওয়ামী লীগের সমর্থকরা এখনো ভ্রান্তিতে আছেন, দেশ নির্বাচনমুখী হলে তারা রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ফিরতে পারবেন। কিন্তু দুঃখিত, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায় স্বীকার না করলে এবং খুন ও গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বাদ দেওয়া না পর্যন্ত এটি সম্ভব হবে না।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের তিনি এসব কথা বলেন। প্রেস সচিব লিখেছেন, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল, আওয়ামী লীগের শাসনামলে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের এবং আদেশকারীদের বিচার করা হবে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে জানিয়ে শফিকুল আলম লিখেন, তারা খুব কমই সমঝোতার বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছেন। তারাও বুঝতে পেরেছেন, অপরাধীরা যদি তাদের অপরাধ স্বীকার না করে, তাহলে কীভাবে সমঝোতার আহ্বান জানানো যায়? বরং তারা সংস্কার এবং দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঠিক করার বিষয়ে বেশি সমর্থন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অধিকার গোষ্ঠীগুলো স্পষ্টভাবে দেখিয়েছে জুলাই-আগস্টে নিরস্ত্র শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর কীভাবে নির্মমভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। বিশেষ করে আমি জন সাধারণকে যাত্রাবাড়ী হত্যাকাণ্ড এবং হৃদয় হত্যার ওপর নির্মিত তথ্যচিত্র দেখার জন্য অনুরোধ করব। আরও তথ্যচিত্র আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসে সংঘটিত অপরাধ তুলে ধরার জন্য তথ্যচিত্র তৈরি করছেন।
শফিকুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগের সমর্থকরা দিনের পর দিন অর্থ খরচ করে ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ, রক্ষী বাহিনীর হত্যাকাণ্ড এবং শেখ মুজিবের একদলীয় শাসনের স্মৃতি মুছে ফেলার চেষ্টা চালিয়ে গেছে। বর্তমান প্রজন্ম জেগে উঠেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রজন্ম স্বৈরশাসনের প্রতিটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে সজাগ রয়েছে। তাদের প্রচেষ্টা প্রতিদিন পুরনো স্মৃতিকে সতেজ করছে। আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেও নাড়া দিয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, বিশ্বও আওয়ামী লীগের ভয়াবহ অপরাধের জন্য জেগে উঠেছে। তবু আওয়ামী লীগের সমর্থকরা চুপ নেই। তবে মনে হচ্ছে, বিশ্ব এগিয়ে গেছে এবং বাংলাদেশ একটি নতুন সূচনার অপেক্ষায় রয়েছে।