মাহবুব আলম মানিক
২০১৩ সালের ১০ জুলাই ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে আপন ভাইকে হত্যা করতে গিয়ে হত্যার মুল পরিকল্পনাকারী মিজান সহ ভাড়াটে খুনিরা ভুল করে হত্যা করেছিলেন প্রতিবেশী বাদল নামের এক ব্যক্তিকে। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড,ও ১ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৯ জানুয়ারী) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবুল মনসুর মিঞা এ রায় দেন। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— পীরগঞ্জ উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামের কাশমত আলীর ছেলে আফসার আলী (২২), একই গ্রামের আনছারুল ইসলামের ছেলে মিজানুর রহমান নিজাম (২৮), রাণীশংকৈল উপজেলার মধ্যবনগাঁও গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে সাগর (২২) ও পীরগঞ্জ উপজেলার পটুয়াপাড়া গ্রামের শহর আলীর ছেলে সুমন (২২)। এদের মধ্যে মিজানুর রহমান ছাড়া অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মিজানুর রহমানের সঙ্গে আপন বড় ভাই মোখলেছের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। বড় ভাই মোখলেছকে হত্যা করে বাবার সব সম্পত্তির মালিক হতে মিজানুর পরিকল্পনা করেন। দুই লাখ টাকায় ভাড়া করেন আফছার আলী, সাগর ও মো. সুমন নামের ওই তিন ব্যক্তিকে।
২০১৩ সালের ১০ জুলাই রাত সাড়ে দশটার সময় উপজেলার হাজীপুর গ্রামের অন্ধকারছন্ন একটি স্থানে মোখলেছকে হত্যার উদ্দ্যেশে অপেক্ষা করে আসামিরা। এ সময় প্রতিবেশী বাদল ওই পথ দিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তখন মোখলেছ ভেবে অন্ধকারে বাদলকে গলাকেটে হত্যা করে পালিয়ে যায় খুনিরা। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বড় ভাই নজরুল ইসলাম। এ মামলায় হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী মিজানুর রহমান, ভাড়াটে খুনি আফছার আলী, সাগর ও সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে জামিন নিয়ে পালিয়ে যায় আফছার আলী, সাগর ও সুমন।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী আব্দুল হালিম বলেন, মামলার ১ নম্বর আসামি মিজানুর রহমান তার নিজ ভাইকে হত্যা করতে খুনীদের ভাড়া করেন। কিন্তু খুনীরা তার ভাইকে খুন না করে ভুলে প্রতিবেশী বাদলকে হত্যা করে। আদালত দীর্ঘ শুনানি ও স্বাক্ষ শেষে মিজানুর রহমানসহ চার ব্যক্তিকে যাবতজীবন করাদণ্ডের আদেশ দেন। রায়ের সময় মিজানুর রহমান আদালতে উপস্থিত থাকলেও বাকী তিনজন পলাতক ছিলেন বলে জানান।