
মিজানুর রহমান, সিংগাইরঃ
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে আদম দালালের খপ্পড়ে পড়ে এক দরিদ্র হকার নি:স্ব হয়ে এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রবাসে কর্মরত এক আদম দালাল ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্থ কোহিনুরের পৈত্রিক বাড়ি উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের কাঞ্চননগর গ্রামে।
বাবার নাম জহিরউদ্দিন ওরফে জহু মাদবর। অপরদিকে আদম দালাল পার্শ্ববর্তী ধল্লা ইউনিয়নের মধ্য ধল্লা বিলপাড়া গ্রামের মৃত হবি মিয়ার ছেলে প্রবাসি আলতাফ হোসেন (৪০)।
জানা গেছে, কোহিনুর ধল্লা ইউনিয়নের বাস্তা গ্রামে বিয়ে করে সেখানেই থেকে ভ্যানে করে আইসক্রীম গ্রামে গ্রামে বিক্রি করে ১ ছেলে ১ মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে অভাবের অভিসারে শান্তিতেই বসবাস করছিল। গ্রামে গ্রামে হকারি করায় দীর্ঘদিনের পরিচয়ের সুবাদে আদম দালাল প্রবাসী আলতাফের স্ত্রী সুলতানা (৩২), ভগ্নী সীমা ওরফে জান্নাতি (২০) সহ তার আরো এক অজ্ঞাত বোন (৩৫) দরিদ্র কোহিনুরকে বিদেশে যেতে বিভিন্ন সময় অকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা, লোভ লালসাসহ পড়ামর্শ দিয়ে আগ্রহী করে তোলে। যুদ্ধ বিধস্থ দেশ লিবিয়া!
চাকুরি হবে তেলের পাম্পে। বেতন হবে ৩০ হতে ৩৫ হাজার টাকা! এতে খরচ পড়বে ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা। তাও আবার চাকুরি পাবার পর পরিশোধ করতে হবে সমস্ত টাকা। অভাবের সংসারে সুখের দেখার সন্ধানে বিভিন্ন আত্বীয়স্বজনসহ এলাকা হতে লাভের উপর টাকা এনে জমাতে শুরু করে কোহিনুর ও তার স্ত্রী আদুরি বেগম।
পরিশেষে গত ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর দেশ ছাড়েন হকার কোহিনুর। কিন্তু লিবিয়া যেতে তার আগে যেতে হয়েছে বাসে করে কোলকাতা, পরে মুম্বাই , সেখানে প্লেনে করে শারজাহ আবুধাবি অতপর মিশর হয়ে গন্তব্যের লিবিয়া দেশে পাড়ি জমান। প্রত্যেকটি দেশ পার হতে লেগেছে সে দেশের দালাল চক্রের সহযোগীতা যা ছিল আদম দালাল আলতাফের মাস্টার প্লানের একটি অংশ মাত্র। লিবিয়া পৌছলে দরিদ্র কোহিনুরকে শর্তভেঙ্গে দেয়া হয় প্রখর রোদের মধ্যে মরুভূমিতে বালু উত্তোলনে বেল্চা মারার কাজ।
লাখ লাখ টাকা ঋণ হয়ে এসেছে দেশ হতে সে চিন্তায় কষ্ট বুকে চেপে সে কাজই করতেছিল। অথচ দালাল আলতাফকে এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে সে কোহিনুরের সাথে কোন যোগাযোগ না করেই উল্টো সামান্য ইমুতে কল করে শান্তনা দিয়ে দায় এড়িয়ে যান। এক সময় কঠোর কাজ করার সময়কালে কোহিনুর অসুস্থ হয়ে পড়লে পুনরায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করে দেশে ফেরত আসেন।
এসব কথাগুলো বলার সময় কোহিনুরের চোখেমুখে অসহায়ত্বের ছাপ লেগেছিল। সরেজমিনে প্রবাসি আদম দালাল আলতাফের বাড়ি ধল্লা বিলপাড়ে গেলে তার স্ত্রী সুলতানা গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, কোহিনুর অসুস্থ বিধায় সেচ্ছায় দেশে ফেরত আসছে। এতে আমরা কেন দায়ি থাকবো।