
কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি:
যশোরের কেশবপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বিশ্বাস অভিযোগটি দাখিল করেন।এ বিষয়ে আগামী রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে এক শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার রাজনগর বাঁকাবর্শী গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান বিশ্বাস ১৯৮৯ সালের কবলা মূলে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন।
জরিপের সময় জমিটি ভ্রমবশত ১/১ খতিয়ানে অন্তর্ভূক্ত হয়। তিনি ২০১৫ সালে জমিটির নাম জারির জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন এর তহশীলদার এর নিকট প্রয়োজনীয় দলিল প্রদান করেন এবং ২০১৬ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি নাম জারির পর্চা হাতে পান। পরবর্তীতে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে গেলে তিনি জানতে পারেন, তার নামে কোন হোল্ডিং খোলা নেই। যার প্রেক্ষিতে তিনি একটি মিস কেস করেন।
কেশবপুর উপজেলা ভূমি অফিস ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি শুনানীর দিন ধার্য করে তাকে প্রথম নোটিশ প্রদান করেন। শুনানীর দিন অফিস বন্ধ থাকায় করোনা পরবর্তী সময়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই কেসের তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ে পাঁজিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসকে নোটিশ করেন।
২০২০ সালের ৮ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে প্রতিবেদনের আলোকে আব্দুল মান্নান বিশ্বাসকে ২য় নোটিশ প্রদান করা হয়।
নির্দিষ্ট দিনে তিনি (ক্রেতা) হাজিরা দেন এবং জমিবিক্রেতা ফুলমতি বেগম আদালতে গরহাজির থাকেন। বাদী পক্ষ থেকে ভূমি অফিসের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক মোঃ আবুল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিবাদীকে তার নির্দিষ্ট ঠিকানায় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিবাদীকে খুঁজে পেতে এবং অফিসে ফাইল খুঁজতে বাদীর ছেলের কাছ থেকে মোঃ আবুল হোসেন এক হাজার টাকা নেন এরপর আবার ২য় শুনানীর দিন ধার্য হয়।
যথাসময় শুনানীতে হাজিরা দিয়ে আবুল হোসেনের সাথে সাক্ষাত করলে তিনি পুনরায় ফাইল এবং বিবাদীর বাড়ি খুঁজে বের করতে আরও এক হাজার টাকা নেন। পরবর্তীতে আবুল হোসেনের কুপরামর্শে ও কথিত সহযোগী আয়শা বেগমের সহযোগিতায় পর্যায়ক্রমে আটবার শুনানীর দিন ধার্য হয় এবং পিছিয়ে যায় মর্মে আব্দুল মান্নান বিশ্বাস অভিযোগ করেছেন।
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার, মিরাজ হোসেনকে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়া হলে তিনি ৯ম শুনানীর দিন ফাইল এবং তদন্ত প্রতিবেদন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট পেশ করেন।
তারপরও মেলেনি সমাধান। ৯ম শুনানীতে আবুল হোসেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে জানান, ‘উক্ত জমির এলএসটি মামলা রয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে এলএসটির মামলার অবস্থান সম্পর্কে জানার জন্য সময়ের প্রয়োজন’। আবার নতুন দিন ধার্য হয়।
এমতাবস্থায় বাদী মনে করছেন বারবার শুনানী পিছিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। যার জন্যে তিনি অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক আবুল হোসেনকে দায়ী করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন আগামী ৩১ জানুয়ারি রোববার তার কার্যালয়ে শুনানির জন্য নোটিশ করেছেন।