যুক্তরাষ্ট্রের সমুদ্র উপকূলবর্তী অঙ্গরাজ্য উত্তর ও দক্ষিণ ক্যারোলাইনা এবং জর্জিয়ায় টানা বৃষ্টি ও বন্যা সৃষ্টি করে ঘূর্ণিঝড় স্যালি এখন উত্তরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। গত বুধবার শুরু হওয়া ঝড়টি এরই মধ্যে ফ্লোরিডা ও আলাবামা অঙ্গরাজ্যে তাণ্ডব চালিয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবরজানিয়েছে।হারিকেন পর্যায় থেকে নেমে স্যালির গতিবেগ অনেক কমে এলেও এর ফলে টানা বষর্ণ চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে এর বাতাসের গতিবেগ ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড়ে বাড়িঘর ভেঙে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলবর্তী অঙ্গরাজ্যগুলোর বহু মানুষ। প্রবল বর্ষণে গতকাল থেকে উপকূলীয় অঞ্চলের পাঁচ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎহীন হয়ে আছে।এ পর্যন্ত ঝড়ের তাণ্ডবে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আলাবামায় অরেঞ্জ সৈকতে একজন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার মেয়র টনি কেনন। ওয়াশিংটন পোস্টকে টনি বলেন, ‘একটা ঝড় হঠাৎ করে ডানের দিকে এতটা মোড় নেবে, তা আমাদের কারো কল্পনায়ও ছিল না।’
অরেঞ্জ সৈকতের ৪৮ কিলোমিটার পূর্বে ফ্লোরিডার পেনসাকোলা শহরেও ব্যাপকভাবে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় স্যালি। সেখানে তিন মাইল দৈর্ঘ্যের একটি সেতু ভেঙে পড়ে পানিতে তলিয়ে গেছে।আলাবামা অঙ্গরাজ্যের উপকূলীয় অঞ্চলে স্থানীয় সময় গত বুধবার ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে স্যালি আঘাত হানে। এ সময় বাতাসের সর্বাধিক গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০৫ মাইল। দুই ফুট বা তারও বেশি বৃষ্টিতে অঙ্গরাজ্যে বন্যার সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও ৩০ ইঞ্চি পর্যন্ত পানি জমে যায়।
ঝড়ের তাণ্ডবে শুধু পেনসাকোলা শহরে আট মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ সাড়ে ৬৭ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সরকারি হিসেবে জানানো হয়েছে। শহরটির ফায়ার সার্ভিসের প্রধান গিনি ক্র্যানর সিএনএনকে বলেন, ‘ঝড়ের ফলে শহরে চার ঘণ্টায় চার মাসের বৃষ্টি নেমেছে।’বর্তমানে বাতাসের গতি কমে ঘণ্টাপ্রতি ৬০ মাইলে নেমে এসেছে। তবে লাগাতার বর্ষণ এবং ঝড়ের কারণে সৃষ্ট স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জলোচ্ছ্বাসে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
হারিকেন স্যালি আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট একাধিক ঝড়ের একটি। ইংরেজি বর্ণমালাক্রম অনুসারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মহাসাগরে সৃষ্ট হারিকেন বা ঝড়ের নামকরণ করে থাকেন। কিন্তু মহাসাগরে একের পর এক ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ায় বার্ষিক বর্ণমালার তালিকার শেষদিকে চলে এসেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।