
নোয়াখালীতে শিশুসন্তান আবদুল্লাহ আল তাওসিবকে কোলে নিয়ে দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছিলেন মা নারগিস সুলতানা (২০)। খবর পেয়ে ছুটে গিয়ে শিশুকে কোলে তুলে দোয়া করেন জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
রোববার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে জেলা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও কেন্দ্রসচিব মেহেরুন নেছা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বাচ্চা কোলে নিয়েই আল মদিনা একাডেমির এক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে আসে। নানির কোলে রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক স্যার এসে অনেকক্ষণ শিশুটিকে কোলে রাখেন এবং মা নারগিস সুলতানার খবর নেন ও বিভিন্ন পরামর্শ দেন।’নারগিস সুলতানার সঙ্গে এসেছিলেন তার মা শাহিন আক্তার। তিনি বলেন, ‘দশম শ্রেণিতে থাকতে নারগিসের বিয়ে হয়। পরে তার কোলজুড়ে আসে একটি ফুটফুটে পুত্রসন্তান। এ অবস্থায় অনেকে তাকে পরীক্ষা দিতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু সে পরীক্ষা দেবেই। তাই আমি সঙ্গে এসেছি। নারগিস পরীক্ষার হলে আর আমি পাশে নাতিকে কোলে নিয়ে বসে ছিলাম। জেলা প্রশাসক স্যার এসে নাতিকে কোলে নিয়েছেন এবং মেয়ের পড়াশোনার খবর নিলেন। ১৮ বছর হওয়ার পর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি বলার পর স্যার অনেক খুশি হয়েছেন।’
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের বিয়ের প্রবণতা বেশি। তাই কেন্দ্র সচিব থেকে বাচ্চা কোলে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়ার খবর পেয়ে সেখানে যাই। খোঁজখবর নিই। পরে শিক্ষার্থীর মায়ের কাছে জানতে পেরেছি ১৮ বছর হওয়ার পর বিয়ে দিয়েছেন। শিশুটি অনেক ফুটফুটে। তাকে অনেকক্ষণ কোলে রাখি। এসময় মেয়েটি পরীক্ষা দিচ্ছিল।’এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অজিত দেবসহ ওই কেন্দ্রের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
নোয়াখালীতে ৯টি উপজেলার ৭৪টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৪৫ হাজার ৬৪৫ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এরমধ্যে এসএসসিতে ৩৪ হাজার ৩১৫ জন, দাখিলে ৯ হাজার ২১৩ জন ও ভোকেশনালে ২ হাজার ১১৭ জন। প্রথম দিনের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিল ৮১১ জন।