রাজিবপুরে শশুর শাশুড়ী ও দেবর মিলে তাসলিমা নামের এক গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
১৮ নভেম্বর সকাল ৯ টায় রাজিবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত তাসলিমা দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার মৌলবিরচর গ্রামের মৃত সালামের মেয়ে বলে জানা গেছে। হত্যার ঘটনায় সৎ শাশুড়ী সালেহা খাতুন নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ব্যাপারে রাজিবপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।
এলাকা ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ১০ বছর আগে বদরপুর রহিজল হকের পুত্র মুকুল হোসেনের সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর থেকেই নানাভাবে শশুর রহিজল হক (৪৮), সৎ শাশুড়ী সালেহা খাতুন (৪০) ও দেবর সানোয়ার হোসেন (২০) প্রতিনিয়ত নির্যাতন করে আসতো তাকে।
নিহত গৃহবধুর যা, মোমেনা খাতুন (২৩) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, বিয়ের পর থেকে সন্তান না হওয়ার জেরধরে নির্যাতন করতো। আমার তিন বছর হলো বিয়ে হয়েছে। আমাকেও নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই দেয়নি।
প্রতিবেশি লালমিয়া (৪২) ও আব্দুল লতিফ (৫০) বলেন, মেয়েটা অত্যান্ত ভালো, তাসলিমার স্বামী কৃষি কাজে বিভিন্ন জেলা সদরে যায়। এরপর থেকেই মেয়েটির উপর চলে নির্যাতন অত্যাচার। আজ সকালেও শশুর, শাশুড়ী ও দেবর মিলে সকাল ৯ টায় নির্যাতন করে। প্রতিবেশিরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে ডাক্তার মৃতু ঘোষনা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী মরিয়ম আক্তার (৫৫) জানান, তাসলিমা টয়েলেটের কাছে কাজ করতে ছিলো। এসময় দেবর সানোয়ার হোসেন টয়লেটে যাবে এবং সরে যেতে বলে। তখন তাসলিমার সরে যেতে দেরি হয়। এসময় সৎ শাশুড়ী সালেহা খাতুন হঠাৎ করে এসে তাসলিমাকে চর থাপর ও লাথি মারে। পরে দেবর সানোয়ার এলোপাথারি কিল ঘুসিসহ মারডাং করতে থাকে। আমি বাচাঁতে গেলে আমার উপর চরাও হয় ও আমাকেও মারার জন্য রুখে আসে। পরে এলাকার মানুষ চিৎকারের শব্দ শুনে এগিয়ে এসে অজ্ঞান অবস্থায় দেখতে পায়। এমতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজিবপুর হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাকে মৃতু ঘোষনা করেন।
কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার সামিউল ইসলাম বলেন, সকাল ১০ টায় গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে আনলে রাস্তায় তার মৃতু হয়।
রাজিবপুর অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আতাউর রহমান বলেন, হত্যার ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যার সত্যতা পাই। পরে নিহতের সৎ শাশুড়ী সালেহা খাতুনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামীরা পালিয়েছে। আটকের চেষ্টায় রয়েছি। এ ব্যাপারে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। লাশটি কুড়িগ্রাম মর্গে প্রেরণ করা হবে।