অটোরিক্সা চালক স্বামীর অবহেলার কারণে ট্রেনের নিচে ঝাপ দেন এক সন্তানের জননী বেবী। তিনি কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের নারী ওয়ার্ডে তার চিকিৎসা চলছে। তার দেখান শোনা করছেন ছোট বোন শারমিন আক্তার ও ভাই মো. হাসান ভোলা।
বোন শারমিন জানান, ৬/৭ বছর আগে শাসনগাছা এলাকার সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক হেলাল উদ্দিনের সাথে আমার বোন বেবীর বিয়ে হয়। প্রথম দিকে পারিবারিক সম্পর্ক ভালো ছিল। ৬ বছর আগে তাদের একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। পরে দেড় বছর আগে বেবীর স্বামী হেলাল উদ্দিন তার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে বেবী স্বামীর বাড়ি শাসনগাছা এলাকা ছেড়ে বাবার বাড়ি বাগিচাগাঁও এলাকায় চলে আসেন। তাদের ডিভোর্স হয়নি। তার স্বামী তার ছেলের দায়িত্বও নেননি। ৬ বছরের ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করানো। তার খরচ বহন করার তেমন কোন উপায় নেই। যে কারণে বেবী পাগলের মত হয়ে যায়। মূলত স্বামীর অবহেলাতেই বেবী ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিতে যান।
কৌশলে বেবী বেগমের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন, আমারে একটা প্লাস্টিকের পা লাগাইয়া দেন। আমি আর মরতে যামু না। একথা বলতে বলতে কান্না শুরু করেন। কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক নাফিজ ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বেবী বেগমের অবস্থা আগের তুলনায় ভালো। তবে এখনও ৪৮ ঘণ্টা যাওয়া ছাড়া তাকে ঝুঁকিমুক্ত বলা যাবে না। বেবী বেগমকে অপ্রকৃতস্থ কিনা এখনই তা বলা যায় না। তার স্বাস্থ্যের আরও উন্নতি হলে মানসিক ডাক্তার দেখাবো। তখন বিষয়টি ক্লিয়ার হবে।
কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ব্যক্তিগতভাবে স্টেশনের কয়েকজনের কাছ থেকে তার জন্য কিছু টাকা উঠিয়ে দিয়েছি। মহিলা গরিব মানুষ। যদি আইনি কোন সাহায্য চান আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।
উল্লেখ্য, ১৬ জুন সকালে কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় আত্মহত্যার জন্য দৌড়ে এসে চলন্ত ট্রেনের সামনে দাঁড়িয়ে যান বেবী বেগম। ট্রেনের ধাক্কায় থেঁতলে যায় তার শরীর। ট্রেন চলে যাওয়ার পর আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সাহায্যে নেওয়া হয় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।