জীবননগরে নদী খননে অনিয়মের অভিযোগ, চলছে মাটি বিক্রির হিড়িক

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার একমাত্র ভৈরব নদীতে দীর্ঘদিন পর চলছে পুনঃ খননের কাজ। নদী খননে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
জীবননগর লক্ষীপুর ও সন্তোষপুর এলাকায় নদীর ধারে থাাক অসংখ্য হতদরিদ্র ও ভুমিহীনদের বাড়ী ঘর ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। তবে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রভাবশালীদের পাকা ভবন ও জমি রক্ষার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানসহ স্থানীয় কতিপয় লোকজনের বিরুদ্ধে। তারা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে দেদারছে বিক্রি করছে নদী খননের মাটি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনে অভিযোগ করেও কোন কাজ হয়নি । সরজমিনে উপজেলার পুরাতন লক্ষীপুর ও সন্তোষপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,সন্তোষপুর বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন ব্রিজের কোল ঘেঁষে প্রভাবশালী জনৈক জিনারুলের পাকা বিল্ডিং রক্ষা করতে নদীর জমি বাদ দিয়ে বিপরীত অংশের কৃষি জমি খনন করা হয়েছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ জিনারুলের বাড়ী রক্ষা করতে তার নিকট থেকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দু’লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অন্যদিকে পুরাতন লক্ষীপুরে শত শত হতদরিদ্র ও ভুমিহীন পরিবারের বাড়ী ঘর উচ্ছেদ করে নদী খনন করা হলেও ব্রিজ সংলগ্ন এলাকার বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের বিল্ডিং রক্ষা করা হয়েছে।
এলাকার রাজা মিয়া,নজরুল ইসলাম,মহিবুল ইসলাম,বিশু,-রমজানসহ প্রায় অর্ধ-শতাধিক ব্যক্তি চাঁদা নিয়ে প্রভাবশালীদের বাড়ী ঘর রক্ষা ও মাটি বিক্রির অভিযোগ করেন। নদী খননের ব্যাপারে নিয়ম-কানুনের সম্বলিত কোন সাইন বোর্ড টানানো না থাকায় এলাকাবাসী জানতে পারছেন না নদীর খননের প্রকৃত নিয়মটা কি?
এদিকে নিয়ম অনুযায়ী নদীর তলদেশ খনন না করে নদীর তীরের পাশে সামান্য দায়সারা খনন করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে নদীর মুল অংশের মাটি কাটা হচ্ছে না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাতের আধারে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটি বিক্রি করে দিচ্ছে। শিয়ালমারী পশুহাট আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাড়ী ঘর ভেঙ্গে নদীর তীর খনন করা হয়েছে। তবে এ অঞ্চলের প্রভাবশালীদের বাড়ী ঘর ও জমি রক্ষা করা হয়েছে টাকার বিনিময়ে।
নদীর তীরে রাখা খননকৃত মাটি বিক্রি হয়ে যাওয়ায় বর্ষা মওসুমে পানির শ্রোত সৃষ্টি হলে নদী ভাঙ্গনের ফলে পার্শ্ববর্তী কৃষি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র জানায়,দর্শনা থেকে জীবননগর পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার নদী খননের জন্য ৩৫ কোটি টাকার বরাদ্দ পাওয়া গেছে। জীবননগর উপজেলার অংশে ৫-৬ টি প্যাকেজে ৬ কিলোমিটার করে নদী খননের জন্য ৮ কোটি চার লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী ৮-১০ ফুট পর্যন্ত নদী খনন গভীর করতে হবে এবং চওড়া হবে ৩০ ফুট। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে কম-বেশীরও বিধান রয়েছে । মাটি কাটার পর খননকৃত মাটি দিয়ে নদীর তীর সংরক্ষণ তথা ও বেডিবাঁধের মত রাস্তা করার কথা এবং বৃষ্টির পানিতে মাটি যাতে নদীতে না পড়ে সে জন্য ঘাস ও গাছ লাগানোর,কিন্তু ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অনেক স্থানে নামমাত্র মাটি কাটছে।
আবার অনেক স্থানে নদীর তীরের কিছু মাটি কেটে নদী ভাঙনের পথ সুগম করে দিচ্ছে। যেখানে খনন হবে না, সে স্থান খননের আওতায় হিসাবও ধরা যাবে না।মীর জাকিরের দাবী,সিডিউল অনুযায়ী নদী খনন হচ্ছে না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নদীর পাড়ে বসবাসকারী কারো উচ্ছেদ আবার কারো অবৈধ রক্ষা কবজ হিসাবে কাজ করছে। আর খননকৃত মাটি বিক্রি তো এখন স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তদন্ত হলেই সব গোমর ফাঁস হয়ে যাবে।এ ব্যাপারে জীবননগর পৌরসভার মেয়র প্যানেল মেয়র সোয়েব আহম্মেদ অঞ্জন বলেন, ঠিকাদার নদী খননে চরম অনিয়ম করছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আশরাফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি প্রভাবশালী লোকজনদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের বাড়ী ঘর রক্ষা করছেন এবং রাতের আধারে বিভিন্ন ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন।
এসব অভিযোগ তদন্ত করলে প্রমাণ মিলবে। আমরা দরপত্র মোতাবেক নদী খননের কাজ করা দাবি জানাচ্ছি।ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আশরাফুল হক বলেন,আমরা কোন মাটি বিক্রি করছি না এবং নদী খননের ব্যাপারে কোন অনিয়ম হচ্ছে না।
সিডিউল মোতাবেকই কাজ হচ্ছে।যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহিদুল ইসলাম বলেন, টাকা উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে ঠিকাদারকে সিডিউল মোতাবেক কাজ করার জন্য কঠোর নিদের্শনা প্রদান করা হয়েছে। কোন অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কোন লোকজন নদী খননের মাটি বিক্রয় করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে

সারাদেশের ইটভাটা মালিকদের মধ্যে হতাশা,ভাটা স্থাপন আইনের সংশোধনের দাবি

মাইনুল ইসলাম: বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী ভাটা মালিকেরা হতাশা এবং আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছেন। সারাদেশের ইটভাটা  মালিকেরা দুর্বিষহ বিভিন্ন প্রকার সমস্যা...

Read more

সর্বশেষ

ADVERTISEMENT

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত


সম্পাদক ও প্রকাশক : মাে:শফিকুল ইসলাম
সহ-সম্পাদক : এডভােকেট-মোঃ আবু জাফর সিকদার
প্রধান প্রতিবেদক: মোঃ জাকির সিকদার

কার্যালয় : হোল্ডিং নং ২৮৪, ভাদাইল, আশুলিয়া, সাভার, ঢাকা-১৩৪৯

যোগাযোগ: +৮৮০ ১৯১ ১৬৩ ০৮১০
ই-মেইল : dailyamaderkhobor2018@gmail.com

দৈনিক আমাদের খবর বাংলাদেশের একটি বাংলা ভাষার অনলাইন সংবাদ মাধ্যম। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ থেকে দৈনিক আমাদের খবর, অনলাইন নিউজ পোর্টালটি সব ধরনের খবর প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রচারিত অনলাইন সংবাদ মাধ্যমগুলির মধ্যে এটি একটি।

ADVERTISEMENT
x