কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ী কেরামত আলীর কাছ থেকে ডিবি পরিচয়ে ৮৫ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের লালবাগ বিভাগের কোতোয়ালি জোনাল টিম। শুক্রবার ঢাকার সাভার, পটুয়াখালী সদর ও রাজধানীর কাজলা এলাকা থেকে এ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়।
শনিবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলো-সোহাগ মাঝি (২৮), মো. দেলোয়ার (২৬), জয়নাল হোসেন (২৮), মো. সোহেল (২৭), মো. জনি (৩২) ও মো. আজিজ (৫৭)। গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে নগদ ২০ লাখ টাকা, একটি হায়েস মাইক্রোবাস ও একটি ডিসকভার মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গত ১৩ নভেম্বর দুপুরে ব্যবসায়ী কেরামত আলী দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দড়িগাঁও বাজারে নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান থেকে নগদ ৮৫ লাখ টাকা নিয়ে পিকআপে করে আবদুল্লাপুরস্থ সাউথ ইস্ট ব্যাংকের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জন ডাকাত কেরামত আলীর গতিরোধ করে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখায় ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায় তারা। ডাকাতির ঘটনায় কেরামত আলী গত ১৪ নভেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার সাভার থানার কাউন্দিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতে পটুয়াখালী সদর এলাকা থেকে একজনকে ১৯ লাখ টাকাসহ ও ঢাকার যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকা থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস ও এক লাখ টাকাসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল কেরানীগঞ্জ থানা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’
ডিবিপ্রধান আরও বলেন, ‘ডাকাতি করার জন্য বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে তারা ডিবি পুলিশ, সিআইডির পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান করত। ব্যবসায়ীসহ আর্থিক লেনদেনকারীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করত। পরে যেসব জায়গায় সিসি ক্যামেরা নেই এরকম নিরিবিলি জায়গায় সুযোগ বুঝে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে ভিকটিমদের গতিরোধ করত। তার পর ভিকটিমদের নামে মামলা বা ওয়ারেন্ট আছে বলে টাকার ব্যাগসহ গাড়িতে তুলে নিত। পরে ডাকাতরা তাদের সুবিধামতো জায়গায় টাকা বা মূল্যবান সামগ্রী ছিনিয়ে নিয়ে মারধর করে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যেত। ডাকাতির কাজে তারা হ্যান্ডকাপ, ওয়্যারলেস ও খেলনা পিস্তল ব্যবহার করে বলে প্রাথমিকভাবে স্বীকার করেছে।’