বিশ্বকাপের সেরা ১০টি গোল

এ বারের বিশ্বকাপে ৬৪টি ম্যাচে হয়েছে ১৭২টি গোল। অর্থাৎ প্রতিটি ম্যাচে হয়েছে গড়ে ২.৬৮টি গোল। স্পেনের হাতে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে কোস্টা রিকা। সেটাই এই বিশ্বকাপের এখনও পর্যন্ত সব থেকে বড় জয়। তার পরেই রয়েছে স্পেনের ৬-১ গোলে জয় সুইজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে। ইংল্যান্ড ৬-২ হারায় ইরানকে। বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ১৬টি করে গোল করেছে ফ্রান্স। ১৫টি করে গোল নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আর্জেন্টিনা। এ বারের বিশ্বকাপে দেখা গিয়েছে বেশ কিছু চোখ ধাঁধানো গোল। বিশ্বকাপে এমন ১০টি চোখ ধাঁধানো গোল নিয়ে আজকের লেখা।

রিচার্লিসন (ব্রাজিল বনাম সার্বিয়া): ব্রাজিল কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায় নিলেও গ্রুপের ম্যাচে করা এই গোল বিশ্বকাপে সেরা হতেই পারে। বাঁ দিক থেকে বল ভাসিয়েছিলেন ভিনিসিয়াস। বাঁ পায়ে রিচার্লিসন বল রিসিভ করার পর কিছুটা উঠে যায়। চকিতে ঘুরে গিয়ে শরীর শূন্যে ছুড়ে ডান পায়ের সাইডভলিতে গোল করেন রিচার্লিসন।

লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা বনাম মেক্সিকো): বক্সের বাইরে ডান দিকে বল পেয়েছিলেন অ্যাঙ্খেল দি মারিয়া। তিনি পাস দেন বক্সের বেশ কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মেসিকে। বাঁ পায়ে বল রিসিভ করেই জোরালো নীচু শট মারেন মেসি। মেক্সিকো গোলকিপার গিয়েরমো ওচোয়াকে পরাস্ত করে বল জালে জড়িয়ে যায়।

কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স বনাম পোল্যান্ড): প্রি-কোয়ার্টারে এমবাপ্পের করা দু’টি গোলই দর্শনীয়। তবে তৃতীয় গোলটি বেশি ভাল। এমবাপ্পে বাঁ দিকে পাস দিয়েছিলেন মার্কাস থুরঁকে। তার পরেই বক্সে ঢুকে পড়েন। থুরঁ সঠিক সময়ে এমবাপ্পেকে আবার পাস দেন। মার্কারকে সরিয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে গোল করেন এমবাপ্পে।

লুইস চাভেজ (মেক্সিকো বনাম সৌদি আরব): ৩০ গজ দূরে ফ্রিকিক পেয়েছিল মেক্সিকো। সামনে বড় চেহারার সৌদি ডিফেন্ডাররা দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের টপকে সরাসরি ফ্রিকিকে বল জালে জড়িয়ে দেন চাভেজ। গোলকিপার মহম্মদ ওয়াইসের কিছুই করার ছিল না।

থিয়ো হার্নান্দেস (ফ্রান্স বনাম মরক্কো): মরক্কোর বিরুদ্ধে শুরুতেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স। সৌজন্যে থিয়ো হার্নান্দেস, যার বিশ্বকাপে খেলাই এক সময় ছিল অনিশ্চিত। গ্রিজম্যানের থেকে পাস পেয়ে বল গোলে মেরেছিলেন এমবাপে। তা মরক্কোর এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বাঁ দিকে লাফিয়ে উঠে যায়। মাথার সমান বল এসেছিল। তবে থিয়ো বাঁ পায়ে মাটিতে ঠুকে বল মারেন। তা বিপক্ষ গোলকিপার ইয়াসিন বুনুকে পরাস্ত করে জালে জড়ায়।

ইউলিয়ান আলভারেজ (আর্জেন্টিনা বনাম ক্রোয়েশিয়া): গোলের থেকেও তার আগের মুহূর্তটি বেশি নজরকাড়া। মাঝমাঠ থেকে একাই বল নিয়ে ক্রোয়েশিয়ার গোলমুখে দৌড়েছিলেন আলভারেজ। মাঝে দুই ডিফেন্ডার এসে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলেও পারেননি। কেউ ট্যাকলও করেননি। কার্যত বিনা বাধায় গোল করে যান আলভারেজ।

নেইমার জুনিয়র (ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়া): অতিরিক্ত সময়ে গোল করেছিলেন নেইমার। মাঝমাঠে বল পেয়ে ক্রোয়েশিয়ার একের পর এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে যান। মাঝে এক বার রদ্রিগোর সঙ্গে পাস খেলে ডমিনিক লিভাকোভিচকে পেরিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন।

সালেম আল-দাউসারি (সৌদি আরব বনাম আর্জেন্টিনা): সৌদি আরবের বিরুদ্ধে গ্রুপের প্রথম ম্যাচেই হারে আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচে সৌদি আরবের জয়সূচক গোলটি করেন আল-দাউসারি। আল আবিদের শট হেড করে ক্লিয়ার করেছিলেন ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো। সেই বল বক্সের মধ্যেই পান আল-দাউসারি। তবে গোল থেকে বেশ কিছুটা দূরে ছিলেন তিনি। সামনে চার আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার। বল ডান দিকে নিয়ে ডান পায়ের বাঁকানো শটে গোল করেন আল-দাওসারি।

রিচার্লিসন দে আন্দ্রাদে (ব্রাজিল বনাম দক্ষিণ কোরিয়া): গ্রুপ পর্বে সাইড ভলিতে গোল করার পর প্রি-কোয়ার্টারেও দুরন্ত গোল করেন রিচার্লিসন। দক্ষিণ কোরিয়া বক্সের বাইরে মাথা দিয়ে দু’বার বল নাচান। তার পরেই মার্কুইনোসকে পাস দেন। তিনি সেটি দেন থিয়াগো সিলভাকে। তার মধ্যেই বক্সে ঢুকে পড়েন রিচার্লিসন। থিয়াগোর থেকে পাস পেয়ে চলতি বলেই শট করে গোল করেন রিচার্লিসন।

কিলিয়ান এমবাপ্পে (ফ্রান্স বনাম আর্জেন্টিনা) বিশ্বকাপ ফাইনালে এসে অসাধারণ গোলটি করলেন এমবাপ্পে। দূর থেকে তার উদ্দেশে লম্বা বল ভাসিয়েছিলেন কোমান। এমবাপ্পে বল ধরে পাস দেন হাঁবিয়কে। তার পরে হাঁবিয়ের ভাসানো বলে শরীর নিয়ন্ত্রণে রেখে চলতি বলেই শটে গোল করেন এমবাপ্পে।