ক্ষুধার্ত বাচ্চাদের খাবার কেনার জন্য ছেলের শিক্ষিকার কাছে মোটে ৫শ রূপি সাহায্য চেয়েছিলেন ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যের ৪৬ বছর বয়সী অধিবাসী সুভদ্রা। তার এই দুরবস্থা দেখে ওই শিক্ষিকা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সাহায্য চেয়ে একটি প্রচারণা শুরু করেন। সেই পোস্ট দেওয়ার পর ওই নারীর জন্য লাখ লাখ রূপি সাহায্য পাঠিয়েছে বহু অচেনা মানুষ। গত রবিবার পর্যন্ত ওই পরিবারটি ৫৫ লাখ রূপি সাহায্য পেয়েছে।
গত অগাস্ট মাসে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই পরিবারের অন্ন সংস্থান করতে হিমশিম খাচ্ছেন সুভদ্রা। তিনি কোন চাকরি খুঁজতে পারছিলেন না কারণ তার তিন ছেলের মধ্যে ছোটটি সেরেব্রাল প্যালসিতে আক্রান্ত। তাকে সারাক্ষণ দেখাশোনা করতে হয়। গত শুক্রবার সুভদ্রা তার ২য় ছেলের স্কুলের শিক্ষিকা গিরিজা হরিকুমারের কাছে গিয়ে বলেন, ছেলেদের খেতে দেওয়ার মত কিছু আর নেই তার ঘরে।
এ বিষয়ে হিন্দি ভাষার শিক্ষিকা মিজ হরিকুমার বলেন, তিনি তার ছাত্র অভিষেকের কাছে আগেও জানতে চেয়েছিলেন যে বাবার মৃত্যুর পর তারা কোন সমস্যায় আছে কি না। কিন্তু এই প্রথম অভিষেক বা তার মা আমার কাছে সাহায্য চান। তখন আমি তাকে এক হাজার রূপি দেই এবং বলি যে আমি কিছু একটা করব। তারপর আমি তাদের বাড়িতে যাই এবং দেখি তারা হতদরিদ্র অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তাদের রান্নাঘরে সামান্য কিছু খাদ্যশস্য আছে, তবে শিশুদের খাওয়ার মত কিছু নেই। তখন আমি ভাবলাম, সুভদ্রাকে সামান্য কিছু সাহায্য দেওয়ার কোন মানে নেই। কারণে এতে তার পরিবারের তেমন কোন উপকার হবে না”।
তিনি জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যাবেলায় পরিবারটির অবস্থা জানিয়ে এবং সবার কাছে সম্ভব হলে তাদের জন্য কিছু সাহায্য সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে ফেসবুকে একটা পোস্ট দেওয়া হয়। ওই পোস্টে সুভদ্রার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরও উল্লেখ করে দেন মিজ হরিকুমার যাতে সাহায্য সরাসরি সুভদ্রার কাছে গিয়েই পৌঁছায়। মবারের মধ্যে পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়।
শিক্ষিকা মিজ হরিকুমার জানান, এরই মধ্যে সুভদ্রার অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে ৫৫ লাখ রূপি। এই টাকার কিছুটা সুভদ্রাদের অসমাপ্ত বাড়ির কাজ শেষ করতে খরচ হবে যে বাড়িটার কাজ তার স্বামী মৃত্যুর আগে শুরু করে গিয়েছিলেন। বাকিটা ব্যাংকেই জমা থাকবে তাদের খরচ চালানোর জন্য। ইতিমধ্যে সাহায্য করার আবেদনটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান ওই শিক্ষিকা। – তথ্য সূত্র বিবিসি বাংলা
