বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শনিবার কাজী জহিরুল ইসলামের একক বইমেলা উদ্বোধন করেন ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক। এ সময়ে মেলা উপলক্ষে প্রকাশিত কবির নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘একালে কাকতলাতে বেল’ গ্রন্থেরও মোড়ক উন্মোচন করা হয়।অনুষ্ঠানে কবির কবিতা থেকে আবৃত্তি করেন রূপা চক্রবর্তী, আহকাম উল্লাহ, নাজমুল আহসান, আব্দুস সবুর খান চৌধুরী এবং প্রান্তিক হোসাইন। কাজী জহিরুল ইসলামের বিভিন্ন গ্রন্থের ওপর আলোচনা করেন কাজী রোজী, জাহিদুল হক, ফরিদ কবির, মারুফুল ইসলাম, রহিমা আখতার কল্পনা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে লেখকের পরিচিতি উপস্থাপন করেন জাঁ-নেসার ওসমান। সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংস্থা স্কলারস পাবলিশার্সের সিইও এম ই চৌধুরী শামীম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমদ রফিক বলেন, কাজী জহিরুল ইসলাম একজন গুণী লেখক, আমি বিস্মিত হয়েছি জেনে যে তিনি মাত্র ৫১ বছর বয়সে ৬১টি গ্রন্থের জনক। নিজের লেখা ছাড়াও তিনি বাঙালি কবিদের ইংরেজি কবিতার বই অ্যান্থোলজি আন্ডার দ্য ব্লু রুফ সম্পাদনা করছেন যা প্রকাশিত হচ্ছে আমাজনের মতো একটি আন্তর্জাতিক মাধ্যমে। এটি খুবই প্রয়োজনীয় একটি কাজ। এমন কাজ এর আগে আর কোনো বাঙালি করেছেন বলে আমার জানা নেই।
কাজী রোজী বলেন, জহির একজন সফল মানুষ এবং একজন সফল লেখক। সাহিত্যের সকল শাখায় তার সফল পদচারণ অনেকেরই ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফরিদ কবির তার বহুমাত্রিকতার প্রশংসা করে বলেন, দেশের বাইরে থেকে যারা সাহিত্যচর্চা করেন তাদের মধ্যে আমি কাজী জহিরুল ইসলামের লেখাই মন দিয়ে পড়ি। আমরা যার ভ্রমণ বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়ি সেই মঈনুস সুলতান তার ভ্রমণের প্রশংসা করে লিখেছেন, তাই আমি খুব সাবধানে এবং গভীর মনোযোগ দিয়ে তার ভ্রমণগ্রন্থ ‘উড়াল গল্প’ পাঠ করেছি।
মারুফুল ইসলাম তার “ক্রিয়াপদহীন কবিতা” গ্রন্থের অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে বলেন, ক্রিয়াপদ তুলে দিয়ে এমন সাবলিল কবিতা লেখা এক দুরূহ কাজ। সেটি কাজী জহিরুল ইসলাম সফলতার সাথে করেছেন। এর মধ্য দিয়েই আমরা টের পাই তিনি একজন উঁচুমানের কবি।
কাজী জহিরুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, আহমদ রফিক বাংলা ভাষাকে স্বাধীন করেছেন, আজ তিনি সেই ভাষার উত্তর প্রজন্মের একজন লেখকের একক বইমেলা উদ্বোধন করলেন এবং সেই লেখক আমি। এটি আমার জন্য এক বিরল সম্মান। তিনি আয়োজক সংস্থা, আলোচক, বাচিক শিল্পীবৃন্দসহ উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
১৩ তারিখ থেকে ১৯ তারিখ প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কাজী জহিরুল ইসলামের একক বইমেলা চলবে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৭ম তলায় অবস্থিত বাতিঘরে। প্রতিদিন বিকেলে লেখক বাতিঘরে বসবেন এবং পাঠকদের সাথে মত বিনিময় করবেন।