ইবি প্রতিনিধি
সর্দি রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা না পাওয়ায় ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (২০১৬-১৭ সেশন) ছাত্রী।
খোজ নিয়ে জানা যায়, আবেগঘন স্ট্যাটাস দেয়া ঐ ছাত্রীর নাম সাবিকুন্নাহার মিতা। গত কয়েকদিন যাবত তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তিনি। যা বৈশ্বিক মহামারী নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ। খুলনার রুপসা থানার মেয়ে সাবিকুন্নাহার শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা নিতে গতকাল (বুধবার) বিকেলে গিয়েছিলেন খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে।
কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শ্বাসকষ্টের রোগী শুনে তার চিকিৎসা নেয়নি। বরং প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেয় তারা। পরে সেখান থেকে নিরুপায় হয়ে ফিরে এসে স্থানীয় এক ডাক্তারের চিকিৎসা নেয়। গতকাল রাত ১১ টা ৫১ মিনিটে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেয় ঐ ছাত্রী। যা মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায়। স্ট্যাটাসে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভোগান্তিতে থাকা রোগীদের প্রতি চিকিৎসকদের অবহেলার চিত্র ফুটিয়ে তোলে সে। পাঠকদের উদ্যেশ্যে স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘আমার বাংলাদেশ-
গত ৩ দিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছি। আজ আর না পেরে খুলনা মেডিকেলে গিয়েছিলাম, কিন্তু কপাল খারাপ। যখন শুনলো শ্বাসকষ্ট, তখন বলে তারা রোগী দেখে না। আমি উত্তরে বললাম তাহলে আমাদের মত লোক কোথায় যাবে??উত্তর আসলো ৩/৪ টা
১) প্রাইভেট ক্লিনিক এ যান।
২) সদর হাসপাতালে যেতে পারেন।
আমরা সরি।
৩ টা ছিলো মজার উত্তর,
ঠিক তখন ৪ জন পুলিশ ২ টা মধ্যবয়সী লোক নিয়ে আসে।
জরুরি বিভাগ থেকে ৩ নং উত্তর আসে ঠিক এভাবে- আমরা এই সব রোগী যায় হোক দেখবো, কিন্তু আপনাকে না।
আমি..
তাদের ২ নং কথার উত্তর হিসেবে বলছি আপনারাই যদি রোগী না দেখেন, সদরের ওরা কিভাবে কি করবে।
ওরা চুপ।
আমি বললাম কোন ডাক্তার নাই আমাকে দেখার মত। আমি তো দম নিতে পারছি না। তারা বলে আজ হবে না কাল আসেন। তখন আমি বললাম আমার অবস্থা খারাপ হচ্ছে তারা বলে সারা দিন কি করছেন?
আমিঃ আর সহ্য করতে না পেরে এখন (৪ঃ৩০) আসলাম।
তারা তখনও বলে হবে না।
আর আমার আপনার প্রশাসনের পুলিশ ভাইয়ারা তখনও দেখল পুরোটা, কিম্তু কোন response নাই। ওখান থেকে চলে আসি আর গ্রাম্য ডাক্তার দেখাই, এখন একটু কম কষ্ট হচ্ছে।
আজকের প্রশাসন তাদের চেতনা নিয়ে জেগেও ঘুম ছিলো। বাহ বাহ..। বড় লেকচার ছাড়েন অথচ আপনারা রোগী দেখেননা আর শ্বাসকষ্টে কেউ মারা গেলে করোনা সন্দেহ তাই না? শেষে জানাজা মিলে না। আমার জন্য দোয়া করবেন। ধন্যবাদ বাংলাদেশ।’
উল্লেখ্য, নোভেল করোনা ভাইরাসের উপসর্গ (জ্বর,শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাঁশি)
নিয়ে প্রতিদিন মৃত্যুবরণের ঘটনা ঘটছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। গত ২৪ ঘন্টায়ও তিন শিশু-কিশোরসহ সারাদেশে মোট ১৩ জনের মৃত্যুবরণের খবর জানা গেছে।
0
Shares
শেয়ার করুন
শেয়ার করুন