শেরপুর(বগুড়া)প্রতিনিধি
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান হাতের কাছে গ্রামীণ জনপদে প্রতিষ্ঠিত কমিউনিটি ক্লিনিক।স্বাস্থ্য সেবার প্রথম স্টেপ হলো কমিউনিটি ক্লিনিক। গ্রামের দূর-দূরান্তের গরীব, দুস্থ্য ও অসহায় মানুষের ভরসার জায়গা এই কমিউনিটি ক্লিনিক। এই প্রতিষ্ঠান জ¦র, সর্দি, কাশিসহ নানা ধরনের সাধারণ রোগের চিকিৎসা, পরামর্শ ও রেফারেল বিষয়ে কাজ করছে। তাইতো করোনা ভাইরাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুকিতে রয়েছে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা। তাইতো পারসোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুইপমেন্ট(পিপিই) প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তারা।
৬ এপ্রিল সোমবার বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ছাতিয়ানী, ভাটরা, বিশালপুর, মাথাইল চাপড়, উত্তর আমইন, উচরং ও গাড়িদহ সিসি ঘুরে দেখা যায়, প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জনের একটা লম্বা লাইন। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখেনি কেউই, মুখে নেই মাস্ক, কমিউিনিটি ক্লিনিকে দায়িত্বরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার বার বার দুরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিলেও কেউ মানছেনা তার কথা। কিন্তু কিছুই করার নেই যারা ক্লিনিকে এসেছে তাদের তো সেবা দিতেই হবে। তাই বাধ্য হয়েই স্বাস্থ্য ঝুকি নিয়ে তাদের সেবা দিচ্ছে দিনের পর দিন। এখানে শংকার বিষয় হলো যারা গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে তারাই না জানি কখন অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। কারন তাদের নেই কোন প্রটেকশন। এই সমস্যা শুধু শেরপুরের ২৯ জনের নয় এটা সারা বাংলাদেশের প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারের।
এ ব্যাপারে খানপুর ইউনিয়নের ছাতিয়ানী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি রাশেদুল হক বলেন, সরকার সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিলেও মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম একটি স্বাস্থ্য সেবা নিতে কমিউনিটি ক্লিনিকে মানুষ আসছেই। আর তাদের সেবা না দিলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ভঙ্গ করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হলেও স্বাস্থ্য বিভাগ খোলা রয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রটেকশনের ব্যবস্থা না করলে আমরা নিজেই স্বাস্থ্য ঝুকিতে রয়ে যাব। তাই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানাই যেন খুব দ্রুত আমাদের পিপিই প্রদান করা হয়।
এ ব্যাপারে বিশালপুর কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন রোগীকে জ্বর সর্দি-কাশি সহ প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা, স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করছি। আমাদের নিরাপত্তার জন্য আধুনিক থার্মোমিটার, গ্লাভস, সার্জিক্যাল মাস্ক, হেক্সিসল ইত্যাদি সরবরাহ করা অত্যন্ত প্রয়োজন। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঝুঁকি নিয়ে শংকিত স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পর্যাপ্ত লজিস্টিক সাপোর্ট বিষয়ে এখনও কোন উদ্যোগ নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ। আমি নিজ উদ্যোগে সার্জিক্যাল গ্লোভস ও মাস্ক ক্রয় করে নিজেকে ঝুকিমুক্ত রাখার চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর ইউনয়িনের মাথাইল চাপড় কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি নুরুল ইসলাম বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীদের ভীড় ও ফ্যাসেলিটির কক্ষ গুলোর আয়তন এত ছোট যে রোগীর হাচি-কাশি স্বাস্থ্যকর্মীর নাকে- মুখে সহজে প্রবেশ করবে। এজন্যই সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছি আমরা। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সকল সিএইচসিপিদের পিপিই বরাদ্দ দেয়ার জন্য উর্ধতন কর্তপক্ষের কাছে দাবি জানাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল কাদের বলেন, সিএইচসিপিদের মাঝে খুব দ্রুত সার্জিক্যাল গ্লোভস ও মাস্ক বিতরণ করা হবে। কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ার (সিবিএইচসি) থেকে সিএইচসিপিদের নামে কোন পিপিই আমরা পাইনি। পেলে তাদের মাঝে দ্রুত বিতরণ করা হবে।