শফিকুল ইসলামঃ
টাকার অভাবে সিজার করতে না পারা সেই গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে সিজারের ব্যবস্থা করেছিলেন মানবতার ফেরিওয়ালা আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ রিজাউল হক দিপু।সেই গর্ভবতী নারী ফুটফুটে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছে।এ সময় শিশুটিকে দেখতে হাসপাতালে উপস্থিত হন আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ রিজাউল হক দিপু।সদ্য ভূমিষ্ট ফুটফুটে নবজাতক শিশুটির দায়িত্বও নিয়েছেন ওসি রিজাউল হক দিপু ও হ্যাপি জেনারেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. রাসিদা বিনতে রিয়াজ হ্যাপি।
জানাযায়, গত তিন মাস আগে ঐ নারীকে ফেলে রেখে তার স্বামী নিরুদ্দেশ হয়। মাস তিনেক আগে ডাক্তারি পরিক্ষা হয় তার, তখন ডাক্তার সম্ভাব্য তারিখ বলে দেয় তাকে। স্বামী ফেলে চলে যাওয়ায় আর ডাক্তার দেখাতে পারেন সে। কিন্তু তারিখ মনে রেখেছেন ঠিকই।অর্ধহারে অনাহারে অসহায় গর্ভবতী নারী শ্রীমতি লিপি রানীর দিন কাটছিল, নেই টাকা পয়সা, নেই আত্মীয়-স্বজন, ডাক্তার দেখাবেন কিভাবে। বিভিন্ন হাসপাতাল ক্লিনিক ঘুরে টাকার অভাবে সিজার করতে ভর্তি হতে পারেন নি কোথাও।শ্রীমতি লিপি রানী (২৫) দেশের বাড়ি গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানার আজহারা গ্রামে। বর্তমানে আশুলিয়ার পলাশবাড়ির লাল মাটি এলাকার মিজানের ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
এ প্রসঙ্গে লিপি রানি বলেন, সন্তান গর্ভে রেখে গত তিন মাস আগে স্বামী তাকে ছেড়ে চলে যায়। আজ ওসি স্যার না থাকলে আমি হয়ত মারা যেতাম আর আমার সন্তান দেখতে পেতো না পৃথিবীর আলো। ওসি স্যার এবং ডা. হ্যাপি ম্যাডাম আমার দেবদূত, তাদের কথা জীবনেও ভুলতে পারবো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ রিজাউল হক দিপু বলেন, শুক্রবার বিকেলে মেয়েটি থানার গেইটে এসে কান্না করছিলো। কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করতেই তিনি জানায়, তার আজ সিজারের ডেট কিন্তু তার কাছে টাকা নেই দেখে কোন ক্লিনিক বা কোন ডাক্তার তাকে সিজার করছে না। পরে আমি উক্ত মেয়েটিকে আমার পূর্ব পরিচিত ডা. হ্যাপি’র মালিকানাধীন আশুলিয়ার বাইপাইলের বগাবাড়িস্থ হ্যাপি জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে তিনি বিনা খরচে তার সিজার এবং সকল চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন।
ঘটনার বর্ণনায় ওসি আরো বলেন, শ্রীমতি লিপি রানীর নবজাতক কন্যা শিশুটির নাম রাখা হয়েছে শ্রীমতি দীপিকা রানী।
এসময় ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু ডা. হ্যাপি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন,ডা. হ্যাপিকে আল্লাহ অনেক হ্যাপি করুক, তার প্রতি আমার অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
আজ থেকে নবজাতক শিশুটির বেড়ে ওঠার সকল দায়িত্ব ডা. হ্যাপি এবং আমার বলেও জানান ঢাকা জেলার শ্রেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা।
এদিকে ওসি শেখ রিজাউল হক দিপু এবং ডা. রাশিদা বিনতে রিয়াজ হ্যাপির প্রতি শ্রদ্ধা ও সাধুবাদ জানিয়েছেন সাভার ও আশুলিয়ার সূধী মহল।