মিজানুর রহমান (সিঙ্গাইর) সংবাদদাতাঃ
সম্প্রতি করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বৃদ্ধি পাওয়ায় ২১ দফা বিধি-নিষেধ আরোপ করে গত ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের জন্য সারাদেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার।
সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের বিধি-নিষেধ অমান্য করার অপরাধে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে গত তিনদিনে ১০ ব্যক্তিকে ১৯ হাজার ৫ শত টাকা জরিমানা ও আদায় করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনা লায়লা ও, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা। এছাড়া বেশ কিছু অটোরিকশা ও ছোট যানবাহন আটক করেছে থানা পুলিশ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লকাউনের প্রথম দিন ভোর থেকেই ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে সিঙ্গাইর উপজেলা তথা মানিকগঞ্জে প্রবেশ ও বহির্গমন ঠেকাতে হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর-মানিকগঞ্জ সড়কসহ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা হয়।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অব্দি হাট-বাজারসহ উপজেলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত চষে বেড়াচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা, সহকারি পুলিশ সুপার (সিঙ্গাইর সার্কেল) রেজাউল হক, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্লা। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে হাট-বাজারসহ লকডাউনের আওতাভুক্ত সব ধরণের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দুরপাল্লার গণপরিবহন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, লকডাউনের বিধি-নিষেধ কার্যকর করতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা, সহকারি পুলিশ সুপার (সিঙ্গাইর সার্কেল) রেজাউল হক, সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) সফিকুল ইসলাম মোল্লা। লকডাউন অমান্য কারীদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা।
শনিবার (৩ জুলাই) অভিযান চালিয়ে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন লঙনের অপরাধে উপজেলার ধল্লা বাজারের হোটেল মালিক সোলাইমানকে দুই হাজার, চারিগ্রামের লালমুদ্দিন, আক্কাস আলী, শওকত, কামরুলকে তিন হাজার ও গোবিন্দল গ্রামের আব্দুর রাজ্জাককে পাঁচশত টাকা জরিমানা করা হয়। এই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রুনা লায়লা।
এছাড়া এদিন হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর আঞ্চলিক মহাসড়কসহ উপজেলার বায়রা বাজার, চারিগ্রাম বাজার ও সাহরাইল বাজারে অভিযান ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা। এসময় করোনাভাইরাস বিস্তাররোধে সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করায় চার ব্যক্তিকে চার হাজার টাকা অর্থদন্ড আরোপ ও আদায় করা হয়।
এর আগের দিন ২ জুলাই উপজেলার জামসা ইউনিয়নের মাটিকাটা গ্রামে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে অভিযান চালান তিনি। এসময় বিয়ে বাড়ির মালিককে দশ হাজার টাকা জরিমানা ও আদায় করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুনা লায়লা বলেন, লকডাউনের বিধি-নিষেধ কার্যকর করতে কঠোর অবস্থানে উপজেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখাসহ বিভিন্ন অপরাধে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আদায় করা হচ্ছে জরিমানা। লকডাউন বাস্তবায়নে যখন যেটা প্রয়োজন সেটাই করা হচ্ছে। করোনা থেকে নিজে ও দেশকে বাঁচাতে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।
সহকারি পুলিশ সুপার (সিঙ্গাইর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান স্যারের নির্দেশে লকডাউন বাস্তবায়নে পুলিশ সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন। হেমায়েতপুর-সিঙ্গাইর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কসহ উপজেলার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কোনো ব্যক্তি বা যানবাহন সড়কে চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে রাস্তায় বেড় হওয়ায় আটক করা হয়েছে বেশ কিছু অটোরিকশা ও ছোট যানবাহন। এছাড়া অনেক পথচারীকে আটক করার পর সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।