গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের নশরৎপুর গ্রামের সেলিম মিয়া (৪০) এক সময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। চার বছর আগে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে অবস্থা ক্রমেই খারাপ হয়ে যায়। ফলে শিকলে বেঁধে রাখা হতো তাকে। এ অবস্থায় গাইবান্ধা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন। সেলিম মিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তিনি। সুস্থ হন সেলিম মিয়া।
তবে আয়-উপার্জনের পথ না থাকায় সেলিম মিয়ার পরিবারটি বেশ অসহায় অবস্থায় ছিল। এ অবস্থা দেখে আবারও তার পাশে দাঁড়ান পুলিশ সুপার। বুধবার সেলিম মিয়াকে ‘সদাইপাতি’ নামের একটি মুদি দোকান উপহার দেন তিনি।
সেলিমের বাবা রিকশাভ্যানচালক মুজিবুর রহমান জানান, সেলিমের স্ত্রী ও একটি মেয়ে আছে। কয়েক বছর আগে সেলিম মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে আর কোনো দিন সুস্থ হবে না- এমনই ধারণা ছিল তাদের।
হঠাৎ করে গাইবান্ধা পুলিশ সুপার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেলিমের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চাইলে তারা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পান। গত বছরের ১৫ জুন সেলিমকে চিকিৎসার জন্য পাবনার হেমায়েতপুর মানসিক হাসপাতালে পাঠান পুলিশ সুপার। চার মাস পাবনায় চিকিৎসার পর সেলিম সুস্থ হয়ে ফিরলেও আয়-উপার্জন না থাকায় চিন্তায় পড়েন।
এ সময় পুলিশ সুপার আবার খোঁজখবর নিয়ে বাড়ির সামনে একটি মুদি দোকান করে দেন। দোকানঘর, মালপত্র, নগদ অর্থ সহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়ান পুলিশ সুপার।
সেলিম মিয়া বলেন, ‘মরার মতোই ছিলাম। এখন আবার নতুন জীবন পাইছি। পুলিশ সুপার স্যারের কথা সারাজীবনও ভুলবার পাবো না। আল্লাহর পরই আমার জীবনে উনার জায়গা। আল্লাহ উনার ভালো করুক।’
পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নানা ধরনের মানবিক কাজকর্ম আমরা করে থাকি। করোনার প্রথম দিকে শহরের ভারসাম্যহীন ভবঘুরে মানুষকে রাত্রীকালীন খাবারও আমরা বিতরণ করেছি।
সেলিম মিয়া চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার পর তাকে পুনর্বাসনের জন্য একটি দোকানঘর উপহার দেওয়া হলো। পরে তার যে কোনো সমস্যায় আমরা তার পাশে থাকব।’