রুখসানা আকতার,সাভার:
এবার এক প্রবাসীর ঘরে খুশির বন্যা বইছে। পর পর চারটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন প্রবাসীর স্ত্রী সুমী আক্তার। এদের মধ্যে দুটি ছেলে আর দুটি কন্যা শিশু। একসঙ্গে নতুন চার অতিথি পেয়ে খুশিতে যেমন আত্নহারা গোটা পরিবার অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যয় নিয়েও শেষ নেই ভাবনার। মঙ্গলবার রাতে পর পর চারটি সন্তানের জন্ম দেন টাঙ্গাইলের বাসাইল থানার কাঞ্চনপুর গ্রামের সুমী আক্তার।
চিকিৎসকরা বলেন, আপাতত নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রেই ডাক্তার ও নার্সদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রয়েছে চার নবজাতক। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিদ্যা বিশেষজ্ঞ ডা. রীনা নাসরিন তত্ত্বাবধানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে ভূমিষ্ঠ হয় চার নবজাতক।চারটি নবজাতকই সুস্থ আছেন। তবে তাদের মধ্যে দু’জনের ওজন অপেক্ষাকৃত কম। প্রত্যেকেই রাখা হয়েছে নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতকের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের নার্স ইনচার্জ সোনিয়া খাতুন জানান, সর্বোচ্চ মানের চিকিৎসা চলছে। সবাই বেশ যত্ববান।
নবজাতকদের চিকিৎসা তত্ত্বাবধানে থাকা এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমাঈল হোসেন জানান, সবকটি বেবী মোটামুটি স্টেইল বলা যায়। তবে অপরিপক্কতাজনিত বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলো অতিক্রম করতে পারলে সুস্থ অবস্থায় আমরা মায়ের কাছে স্থানান্তর করবো।
তিনি আরও জানান, ৩১ সপ্তাহে ভূমিষ্ঠ হওয়া বেবীদের ওজন ১১শ’ গ্রাম থেকে ১২শ’ গ্রামের মধ্যে। এদের মধ্যে দু’জনের বেশি অক্সিজেন লাগছে। একটি সুস্থ সবল নবজাতকের বয়স হতে হবে ৩৭ সপ্তাহ। আর ওজন হতে হবে ২৫শ’ গ্রাম। ওরা হয়েছে ৩১ সপ্তাহে। তাই নতুন করে ওজন কম ও অপরিপক্কাজনিত কোনো সমস্যা না হলেও আমরা আশা করছি ওদের দ্রুত ছাড়পত্র দিতে পারবো।
নবজাতকদের মা সুমী আক্তার দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করে বলেন, হাসপাতালের নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রের খরচ বহনের মতো সামর্থ আমাদের নেই। ওষুধ আর বিল পরিশোধের দুশ্চিন্তা সব আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে রোমানিয়া থেকে নবজাতকদের বাবা আব্বাস খান জানান, মাত্র সাত মাস থেকে দেশ থেকে আমি প্রবাসে এসেছি। একসঙ্গে চার নবজাতকের জন্ম নেবার খবরে আমি এত্তো খুশি হয়েছি যে, মনে হচ্ছে এক্ষুনি বাংলাদেশে ছুটে যাই। কিন্তু ইচ্ছে হলেও আমার সেই উপায় নেই। আমি একজন প্রবাসী।
তিনি আরও বলেন, সংসারের অভাব ঘোচাতে আমি রোমানিয়া এসেছি। অভিবাসন ব্যয় ওঠাতেই আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়। তার ওপর আইসিইউতে চারটি নবজাতকের চিকিৎসা বিল কোথা থেকে পরিশোধ করবো সেই ভাবনাতেই টেনশনে আছি।
দেশবাসীর সাহায্য প্রার্থনা করে তিনি বলেন, আমি সামান্য একজন প্রবাসী। সরকার যদি সদয় হয়ে আমার নবজাতকদের চিকিৎসায় উদ্যোগ নিতো তাহলে আমি খুশি হতাম। এ ব্যাপারে দেশ ও প্রবাসে থাকা সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রবাসী।