রৌমারীতে জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শাহাদত হোসেন (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এতে পুলিশসহ উভয়পক্ষের আহত হয়েছেন ১৭ জন। মঙ্গলবার সকাল ৯ টায় উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় বুধবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩জন মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় ও নিহত পরিবার সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর গ্রামে আবুল হোসেন ও নুর ইসলামের মধ্যে জমাজমি নিয়ে দির্ঘদিনের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে আদালত ও থানায় পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলা রয়েছে। ঘটনার দিন বিরোধপূর্ণ জমিতে আবুল হোসেনের পক্ষের লোকজন সরিষা তুলে নিয়ে যাচ্ছিল। এ নিয়ে নুর ইসলামের পক্ষের লোক ট্রিপল নাইনে ফোন দেয়। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এসআই খুফিল, কনষ্টেবল সোহেল ও রাশেদ ঘটনাস্থলে যান
। এ সময় পুলিশের সামনে দু’পক্ষের শতশত লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে গুরুতর আহত হন শাহাদত, রিতা, শেফালী, বাছিরন, রাবেয়া, মন্টু মিয়া ও শহিদুল। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বুধবার সকাল ৭টার দিকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় শাহাদত হোসেন নামে একজন মারা যান।
নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে বুধবার এলাকায় আবারও উত্তেজনা বিরাজ করে এবং আবুলের বাড়ি ভাঙ্গচুর ও লুটপাট করে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রৌমারী, সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) ঘটনা স্থলে পরিদর্শনে যান। নিয়ন্ত্রনে আনতে রৌমারী রাজিবপুর থানার ওসিসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এ সময় উত্তেজিত জনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে ও পুলিশের এসআই শাহাদতের ওপর চড়াও হয়। এতে তোপের মুখে পড়ে পুলিশ।
এ ঘটনায় আজিজুল হক নামের একজন বাদী হয়ে ৪৩ জনকে আসামী ও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাত করে রৌমরী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। আটককৃত ৩ জন হলেন আফরিনা আকতার, কুপিয়া বেগম ও আফরুজা বেগম।
সহকারি পুলিশ কর্মকর্তা (এসআই) খুফিল জানান, ট্রিপল নাইনে ফোন পেয়ে সেখানে যাই। ঘটনাস্থলে পৌছার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং শান্ত করার চেষ্টা করি। উভয়পক্ষের শতশত লোকজনের সংঘর্ষে আমরা তিনজন কুলে উঠতে পারিনি। তবে আমরাও তাদের লাঠিচার্জে আঘাত পেয়েছি। আমরা তাদের উপর প্রতিবাদ করতে গেলে গুরুতর বিপদের সম্ভাবনা ছিল।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ লুৎফর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি নিয়মিত হত্যা মামলা হয়েছে। ওই ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। বাকি আসামীদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। সেই সাথে লাশ ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। #