রুখসানা আকতার:
ঢাকার ধামরাইয়ে দুই ইটভাটা ব্যবসায়ীকে হয়রানির অভিযোগে মো.শাহীন আলম (৪০) নামে এক ব্যক্তি ও তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া এলাকায় ধামরাই-মির্জাপুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা যোগ দেন। অভিযুক্ত মো.শাহীন আলম ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের বাস্তা এলাকার বাসিন্দা। তিনি ’আমার বাংলা’ নামে অনিবন্ধিত একটি পোর্টালের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। হয়রানির শিকার দুই ভুক্তভোগী হলেন- আব্দুল হামিদ (৬০) ও আব্দুস সামাদ (৫৫)। তারা ধামরাইয়ের বালিয়া ইউনিয়নের বালিয়া এলাকার বাসিন্দা।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান,গত ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বালিয়া এলাকায় মেসার্স বালিয়া ব্রিকস নামে একটি ইটভাটায় যান মো.শাহীন আলম। এ সময় তিনি ভাটার এক পরিচালকের কাছে অনুষ্ঠান উপলক্ষে অর্থ দাবি করেন। ওই পরিচালক তাকে ১ হাজার টাকা দেন। তবে তাতে আপত্তি জানিয়ে আরও টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বিভিন্ন হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যান। এরপর রাতে এক নারীর ভিডিও প্রকাশ করেন তিনি। ভিডিওতে ওই নারী অভিযোগ করে দাবি করেন,চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাকে ইটভাটায় ডেকে নিয়ে মদ পান করে ধর্ষণ করে ইটভাটা পরিচালক ও তার ভাই। এই ভিডিও প্রকাশের পর নানাভাবে দুই ইটভাটা ব্যবসায়ীকে হয়রানি করে আসছিলেন তিনি। বিষয়টি মীমাংসার জন্য ১ লাখ টাকা দাবি করেন তিনি। এ ঘটনা জানতে পেরে হযরানি থেকে মুক্তি ও জড়িত শাহীন আলমের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী।
এ সময় ’চাঁদাবাজ শাহীনকে গ্রেপ্তার করো, করতে হবে’,শাহীনের বিচার চাই,বিচার করতে হবে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা। এদিকে ধর্ষনের অভিযোগ তুলে নারীর বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ’আমার বাংলা’ নামে পেজে গত দুই দিন আগে প্রকাশ করা হলেও এখনও এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ কিংবা মামলা করা হয়নি। এমনকি ওই নারীও গা ঢাকা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী দুই ব্যবসায়ীর দাবি,ওই নারীকে তারা চেনেন না। তাদের এমন কোনো ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততাও নেই। শাহীন আলম দাবি করা চাঁদা না পেয়ে হয়রানির জন্যই এ ভিডিও প্রকাশ করেছেন। এমনকি ভিডিও সরিয়ে নিতে অর্থ দাবি করছেন। এ ঘটনায় চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ তুলে গতকাল বুধবার ঢাকা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে একটি মামলা করেন ভুক্তভোগী। মামলা তদন্তে পিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অবিলম্বে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মো.শাহীন আলম বলেন,ধর্ষণের ঘটনার কথা শুনে গেছিলাম (ইটভাটায়)। যাওয়ার পর জিজ্ঞেস করায় কিছুটা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। মেয়ের বক্তব্য আমার কাছে ছিল। বক্তব্যসহ অফিসে পাঠাইছি। অফিস ধরছে। দিছি আমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এতটুকুই। এর বাইরে কিছু জানি না।
ওই নারী কোনো অভিযোগ বা মামলা করেছেন কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, ওই মহিলার আইনজীবী মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানায়। ওই নারী মূলত গার্মেন্টসকর্মী। চাকরির সন্ধানে ছিল। তার ভাষ্য,থানার প্রতি তার বিশ্বাস ভরসা নাই। তার চিন্তা। আমি বক্তব্য নেওয়ার সময়ও ছিলাম না। মানববন্ধনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে কাজ করছেন জানিয়ে ফোন রেখে দেন তিনি।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় ওই নারীর কোনো অভিযোগ পাইনি।