সাভার বিরুলিয়া ইউনিয়নের বিরুলিয়া গ্রামের দিনমজুর নজরুল ইসলামের মেয়ে মেঘলা আক্তার(২৫)স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে কন্যা সন্তান নিয়ে মানবতের জীবনযাপন করছে বলে অভিযোগ করেছেন।
আজ ১৬ ই মার্চ ২০২৫ রবিবার দুপুর আনুমানিক ১২ টার সময় মেঘলা আক্তারের স্বামী সালেহ আহাম্মেদ দানিয়েল চৌধুরী(৩২) হঠাৎ করে মেঘলা আক্তারের বাবার বাড়ি বিরুলিয়া গ্রামের যায়। মেঘলা তার স্বামীকে দেখে ঘরে নিয়ে বসতে বলেন, এবং মেঘলার আড়াই মাসের কন্যা সন্তানের জন্য দুধ এবং মেয়ের ভরণপোষণ চাইলে মেঘলার স্বামী দানিয়েল চৌধুরী উত্তেজিত হয়ে স্ত্রী মেঘলাকে বেধর পেটাতে থাকেন। মেঘলার আত্মচিৎকারে বাড়ির আশপাশের লোকজন আত্মীয়-স্বজন ছুটে আসেন এবং মেঘলাকে উদ্ধার করে ও সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বেধর মারধরে হাত পায়ে জখম আঘাতপ্রাপ্ত হয় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
মেঘলার বাবা নজরুল ইসলাম আমাদেরকে জানান,আমার মেয়ে মেঘলা আক্তারকে বিরুলিয়া ইউনিয়নের সামাইর গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান চৌধুরীর বড় ছেলে সালেহ আহাম্মদ দানিয়েল’র সাথে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে বিবাহ দেই। বিয়ের এক বছর ভালোভাবেই তাদের দাম্পত্য জীবন কাটছিল। হঠাৎ করে দানিয়েল’র মা মৃত্যুবরণ করলে তাদের দুই ছেলে দানিয়াল ও আদনান চৌধুরী নেশায় আসক্ত হয়ে যায়। এবং তার ছোট ভাই আদনান চৌধুরী নেশা করতে করতে মাদক বিক্রি’র সঙ্গে জড়িয়ে যায়।
এখন নিয়মিত মাদক ব্যবসায় সাথে শাহেদ আহমেদ আদনান ও দানিয়েল কেউ পুরাপুরি নেশাখোর বানিয়ে ফেলেন। তাদের এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের আমার মেয়ে মেঘলা আক্তার বিরোধিতা করলে তাদের চোখে কাল হয়ে ওঠেন।
নজরুল ইসলাম আরো বলেন,দানিয়ালের ছোট ভাই শাহেদ আহমেদ আদনান চৌধুরীর(২৮) যোগসাঁজসে মেঘলার আক্তারের উপর এ যাবৎ নির্মম নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি উদাহরণস্বরূপ আজকের ঘটনাকে উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে আহত মেঘলা আক্তার বলেন,আমার স্বামী দানিয়েল চৌধুরী বিয়ের পরে এক বছর ভালোভাবেই আমাদের সংসার চলছিল,আমার শাশুড়ি মারা যাওয়ার পর থেকে আমার স্বামীর ছোট ভাই শাহেদ আহমেদ আদনান চৌধুরী’ও তার স্ত্রীর যোগসাঁজসে আমার স্বামী দানিয়েল চৌধুরী দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন ও আমি তখন ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম।আমার স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের শুনে আমার বাবার বাড়ি থেকে শশুর বাড়ি সামাইর ছুটে যাই,তখন তাদের সঙ্গে আমার বহু তর্কবিতর্ক হয়,এক পর্যায়ে আমার দেবর আদনান চৌধুরী অর্থাৎ আমার স্বামীর ছোট ভাই লাঠি সোটা নিয়ে আমার উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। আমি তখন অন্তঃসত্তা ছিলাম আমার পেটের উপর সজরে লাথি মারেন আদনান এতে করে আমার সেন্সলেস হয়ে পড়লে,আশেপাশের লোকজন আমাকে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করার পরে ডাক্তার আমার অবস্থা বেগুতি দেখে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের জরুরি ভিত্তিতে পাঠিয়ে দেয় এবং আমার পরিবার কয়েকদিন আমাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পরে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তৎকালীন সময় আমার বাবা নজরুল ইসলাম সাভার মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
মেঘলা আক্তার আরোও বলেন,আমার শাশুড়ি মারা যাওয়ার এই এক বছরে আমার উপরে অসহ্য নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে,আমার স্বামী দানিয়াল,দেবর আদনান,আমার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী মরিয়ম আক্তার লিলি,ও আদনানের বউ। এ সকল বিষয় নিয়ে এই এক বছরে বহুবার গ্রাম্যশালীশ,এলাকার মেম্বার সহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে পুলিশ ক্যাম্পে বিচার সহ একের পর এক থানায় অভিযোগ দায়ের সহ একাধিক বার বিচার সালিশের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তারপরেও এরা কিছুই মানছেন না। আমার ভরণপোষণ ও আমার নবজাতক মেয়ের ভরণপোষণ দিচ্ছে না। আমি ৬ মাস যাবত আমার দিনমজুর বাবার বাড়িতেই আমার নবজাতক কন্যা সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আমি আমার নির্যাতনের বিচার চাই ও আমার নবজাতক কন্যা সন্তানের স্বীকৃতি চাই।