পবিত্র ভূমি ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা ও ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সারাদেশের মতো কুড়িগ্রামের সীমান্তবর্তী উপজেলা রাজিবপুরেও গর্জে উঠেছে প্রতিবাদের ধ্বনি। মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত এ নৃশংস হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে রাজপথে নেমেছে রাজিবপুরের বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে রাজিবপুর উপজেলার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে জমঈয়ত শুব্বানে আহলে হাদীস বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ আহলে হাদীস তা’লীমী বোর্ড-এর উদ্যোগে এই শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে রাজিবপুরের বিভিন্ন মাদরাসার শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবক প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন হাতে নিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন ফিলিস্তিনবাসীর সঙ্গে।
“গাজা এখন লাশের শহর”, “ফিলিস্তিনের শিশুদের বাঁচতে দাও”, “ইসরাইল একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্র”, “ফিলিস্তিনের রক্তে রঞ্জিত মানবতা-আমরা চুপ থাকব না” এমন হৃদয়বিদারক ও প্রতিবাদী স্লোগানে মুখরিত হয় রাজিবপুরের প্রধান প্রধান সড়ক।
বক্তারা বলেন, “ফিলিস্তিনে বর্তমানে যে বর্বর গণহত্যা চলছে, তা শুধু মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য হুমকি। নারীর আর্তনাদ, শিশুর নিঃশেষ চিৎকার, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ঘরবাড়ি এসব প্রমাণ করে যে, ইসরাইল নিছক একটি রাষ্ট্র নয়, বরং একটি নিষ্ঠুর ও সন্ত্রাসী শক্তি।” তারা আরও বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত অবিলম্বে এই আগ্রাসন থামাতে কার্যকর ভূমিকা রাখা। আর বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের উচিত, মানবতার পক্ষে দাঁড়িয়ে জুলুমবিরোধী কণ্ঠকে আরও উচ্চকিত করা।”
বক্তারা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান যেন তারা এই যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেন। একই সঙ্গে তারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও মানবতাবাদী জনসাধারণকে দোয়া ও প্রতিবাদের ধারা আরও জোরদার করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় কয়েক হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। ধারাবাহিক এই হামলার ফলে গোটা গাজা যেন পরিণত হয়েছে এক মৃত্যুপুরীতে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, রাজিবপুরে অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধন জনমত গঠনে এবং আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণে একটি সাহসী ও সময়োপযোগী উদ্যোগ। মানবতার পক্ষে এই ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি ভবিষ্যতে আরও প্রসারিত হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।