‘আমার একটা হাত নাই, আর্টিফিশিয়াল (কৃত্রিম) হাত; এটাও ওরা (পুলিশ) বাড়ি মেরে ভেঙে ফেলছে। আমার কাছে কি পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা আছে যে আমি আরেকটা হাত কিনে নেব? এটা কি রাষ্ট্রের কোনো কার্যক্রম হতে পারে? আমার একটা হাতই নেই, এটা হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল (কৃত্রিম)—সেটাও আবার বাড়ি দিয়ে ভেঙে ফেলছে; এট কোনো রাষ্ট্রের কার্যক্রম হতে পারে না।’
জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় পুলিশের পিটুনিতে আহত হওয়ার পর কথাগুলো বলছিলেন আতিকুল ইসলাম (আতিকুল গাজী)। আতিকুলসহ কয়েক শ ব্যক্তি নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ হিসেবে পরিচয় দিয়ে গতকাল রাত থেকে সংসদ ভবন এলাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। তাঁদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর হতে দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারীরা সকালে প্রাচীর টপকে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেন। পুলিশ কর্মকর্তা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্যরা অনুরোধ করলেও তাঁরা সরছিলেন না। পরে একপর্যায়ে পুলিশ জোর করে তাঁদের তুলে দেয়।

আজ শুক্রবার দুপুরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান; ভাঙচুর করেন পুলিশের বাসসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি, আগুন জ্বালান সড়কে। দুই ঘণ্টা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার পর বৃষ্টির মধ্যে বিকেলের আগে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিদের ঢিল ছোড়াছুড়ি, পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ এবং সাউন্ড গ্রেনেড ফাটানোর মধ্যে উভয় পক্ষের অন্তত ২৭ জন আহত হন। এঁদের একজন আতিকুল ইসলাম।
আজকে আহত হওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানান আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘ডাক্তার ওষুধ লিখে দিয়েছে। এরপর এক্স–রে একটা করল, বলেছে যে হাড় ভাঙে নাই। তবে একটু নইরা (নড়ে) গেছে। আমি ট্রিটমেন্ট (চিকিৎসা) নিয়ে বাসায় আসলাম একটু বিশ্রামের জন্য। ডাক্তার বলেছে, কিছুদিন বিশ্রামে থাকতে হবে।’
এপিবিএনের (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) সদস্যরা তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছে জানিয়ে আতিকুল বলেন, ‘আমরা আমাদের যৌক্তিক দাবির জন্য সংসদ ভবনের সামনে ঘেরাও করেছিলাম। যার জন্য আমাদের ওপর আগে চড়াও হয়ে আক্রমণ করে।’













