পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বড় ডালিমা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারুন মুন্সির সরকারি চাকরিজীবি সন্তান মোঃ অলিউল্লাহ মুন্সি (৪০) কে ও তার পরিবারকে দুষ্টু চক্রের ষড়যন্ত্র মূলক রুজিনা বেগম নামের এক নারীকে দিয়ে মিথ্যা বানোয়াট সাজানো মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অলিউল্লাহ মুন্সি অভিযোগ করেন- পাওনা টাকার শালিস মীমাংসার সূত্র ধরে আমি আমার চাচাতো ভাই ফরহাদ হোসেন গংদের বিরুদ্ধে সিআর-৩০৭ নং মামলা দায়ের করায় এবং সে মামলা তুলে না আনায় আমাকে ও আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের এক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে রুজিনা বেগম কর্তৃক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট সাজানো কথাবার্তা লিখে বাউফল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করানো হয়। এবং ওই মহিলা রুজিনা বেগম কর্তৃক মিডিয়াকর্মীদের কাছে রুজিনা বেগমকে শিখিয়ে দিয়ে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দেওয়ায় আমি দ্বিতীয়বার বিজ্ঞ আদালতে এমপি মামলা নং ১৬৫ করায় দুষ্ট চক্রের কারসাজিতে ওই মহিলা রুজিনা বেগমকে দিয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মিথ্যা বানোয়াট সাজানো মামলা দিয়ে হয়রানি সহ বিভিন্ন ভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। যা পিবিআই কর্তৃক তদন্ত চলমান রয়েছে। আমার কাছে বিভিন্ন ভাবে দুষ্ট চক্র মোটা অংকের টাকা দাবি করেছে তা ডকুমেন্টস সহ বিভিন্ন ডকুমেন্টস রয়েছে। আমি ও আমার পরিবার কর্তৃক এই মামলার সুস্পষ্ট তদন্ত পূর্বক সাংবাদিক কর্তৃক রিপোর্ট করার অনুরোধ জানাই।
তারই ধারাবাহিকতায় অনুসন্ধানী প্রতিবেদক গত রোববার-২৫ ইং তারিখ থেকে তিনদিন পর্যন্ত সরেজমিনে অনুসন্ধান চালান। অনুসন্ধানে নেমে জানা যায়- প্রথমে পাওনা টাকার বিষয় নিয়ে অলিউল্লাহ মুন্সি বাদী হয়ে ফরহাদ গংদের বিরুদ্ধে পটুয়াখালী বিজ্ঞ আদালতে একটা সিআর ৩০৭/২৫ নং মামলা করেন। এরপর অলিউল্লাহ মুন্সি কর্তৃক রুজিনা বেগম নামে এক মহিলাকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয় মর্মে রুজিনা বেগম মিডিয়ার ক্যামেরার সামনে অভিযোগ তুলে বক্তব্য দেন এবং বাউফল থানায় গত ২১/০৬/২০২৫ ইং তারিখে যাহার স্মারক নং ১৫৪৩/২৫ অভিযোগ দায়ের করেন। তারই প্রেক্ষিতে অলিউল্লাহ মুন্সি আবারও পটুয়াখালী বিজ্ঞ আদালতে রুজিনা বেগম সহ তার স্বামী ও ফরহাদ সহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে গত ০১/০৭/২৫ তারিখ একটা এমপি মামলা নং ১৬৫/২৫ দায়ের করেন। যাহার তদন্ত বাউফল থানায় আসলে এএসআই আরিফুল ইসলাম কর্তৃক তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়। তবে অলিউল্লাহ মুন্সি জানান- তদন্ত রিপোর্টে এএসআই আরিফুল ইসলাম অনেক ভুল করে বসে আছেন।
এদিকে অলিউল্লাহ মুন্সির এমপি মামলা করার কয়েকদিন পর রুজিনা বেগম কর্তৃক অলিউল্লাহ মুন্সি কে আসামি করে পটুয়াখালী বিজ্ঞ আদালতে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে তাকে বিভিন্ন নির্যাতন সহ ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু অলিউল্লাহ মুন্সির বিরুদ্ধে রুজিনা বেগম কর্তৃক প্রথমে বাউফল থানায় তারিখ ১৬/০৬/২০২৫ ও সময় রাত অনুমান ৯:৩০ মিনিটের ঘটনার কথা তুলে ধরে যে অভিযোগ করেন তাতে কোনো প্রকার ধর্ষণ চেষ্টা করেছে বা হয়েছে এমন কথা উল্লেখ করেননি রুজিনা বেগম। তবে পটুয়াখালী বিজ্ঞ আদালতে একই তারিখ ও সময় উল্লেখ করে অলিউল্লাহ মুন্সিকে আসামি করে ধর্ষণ চেষ্টা সহ নির্যাতনের মামলা দায়ের করায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। এবং টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিনত হয়েছে।
এবিষয়ে রুজিনা বেগম সরেজমিনে অনুসন্ধান প্রতিবেদককে বলেন- অলিউল্লাহ আমাকে অনেকদিন ধরে ডিস্টার্ব করে। আবার আমি সরকারি জায়গায় থাকি দেখে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায় আবার এখান থেকে নামিয়ে দিবে বলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়। তা তার পরিবার সহ এলাকাবাসীকে জানালে তারা সঠিক বিচার না করায় আমি আদালতে এই মামলা করি। আমি কারও কথায় বা কারও প্ররোচনায় মামলা করিনি। আমি বিচার পাওয়ার জন্য মামলা করেছি। এদিকে প্রতিবেদক ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়ে জানতে চাইলে রুজিনা বেগম বলেন- হয় আমাকে ধর্ষণ চেষ্টা করেছে বলে আর কোনো কথা বলেননি।
এদিকে রুজিনা বেগমের করা মামলার স্বাক্ষী চায়না বেগমের কাছে ধর্ষণ চেষ্টা সহ নির্যাতনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন- আমি কিছু জানিনা এবং দেখি নাই। আরেকজন এই মামলার স্বাক্ষী ফরহাদ মুন্সি লিখিত ভাবে বলেন- অলি রুজিনাকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হলে আমি ঘটনাক্রমে তাদের স্বাক্ষী হয়ে যাই। অলি আমাকে ধরাপরা করে এবং বলে- আপনারা আমাদের এটাকে একটা ফয়সালা করে দেন। তাতে আমি রাজি না হওয়াতে ঘটনা ঘটার পর থেকে যে সময়টা গেছে এরফাকে সে আগাম আমার তিন ভাইয়ের নামে মিথ্যা বানোয়াট সাজানো একটা সিআর মামলা করেছে। এবং আরও একটি মিথ্যা বানোয়াট সাজানো এমপি মামলা করে আমাদের বিরুদ্ধে ও রুজিনার বিরুদ্ধে। আমার দুই ভাই ঢাকাতে চাকরি করে। তাহারা বছরেও একবার আসেনা গ্রামে। এদিকে আমি আমার ফার্মেসি ব্যবসা নিয়ে সবসময় ব্যস্ত থাকি।
ফরহাদ মুন্সি আরও বলেন- একটা অসহায় গরিব লোকের পাশে দাড়ানো কি অপরাধ? এই অলির বয়স ৪৫ বছরের বেশি হবে এখন পর্যন্ত বিবাহ করেনি। সে এরকমের আরও মহিলাদের সাথে খারাপ কাজ করেছে। তারা মান সম্মানের ভয়ে কারও কাছে বলেনা। তবে এই অসহায় গরিব ফেমিলি সঠিক বিচার পাক আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি বলে জানান।
রুজিনা বেগমের মামলার স্বাক্ষী তার বাবা আজাহার সরদার বলেন- ওখানে শয়তানের দল আছে। সেই শয়তানের দলের পাল্লায় পড়ে একাজটি করেছে। আমি আমার মেয়েকে বলেছি তুই কোনো হানে কোনো কথা কবিনা। আর শয়তানের পাল্লায় পরিসনা।
এদিকে স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট সাজানো ষড়যন্ত্র মূলক মামলা মনে হচ্ছে। তবে তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই যেন অবশ্যই সঠিক যাহা সত্য আর যাহা মিথ্যা তা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন বলে অনুরোধ জানান।













