বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বক্তব্যকে ‘অপ্রত্যাশিত’ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, এটা তাদের বিষয় নয়, এটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ধরনের কমেন্ট সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত। বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতিসংঘের ৮১তম সাধারণ অধিবেশনের সভাপতির পদে বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিন পরস্পর মুখোমুখি হবে না বলে জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, এ বিষয়টা নিয়ে বাংলাদেশের যত আগ্রহ, ফিলিস্তিনের কিন্তু এত আগ্রহ নেই। ফিলিস্তিন এটা নিয়ে এতটা চিন্তিত না। নির্বাচন হবে ২০২৬-এর জুন মাসে। সেই নির্বাচনে বাংলাদেশ এবং ফিলিস্তিন পরস্পর মুখোমুখি হবে না।
উল্লেখ্য, বিগত সরকারের সময়ে জাতিসংঘের ৮১তম সাধারণ অধিবেশনের সভাপতির পদে ভোট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারও জাতিসংঘে সভাপতির প্রার্থিতা করার সিদ্ধান্ত নিল। সরকার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে এ পদের জন্য মনোনীত করে। তবে চলতি বছর ফিলিস্তিন এ পদে প্রার্থিতার সিদ্ধান্ত নেয়। আর দেশটি ফিলিস্তিন হওয়ায় বাংলাদেশের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের কথা জানা যাচ্ছে।
সাবের হোসেনের বাসায় ৩ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক: আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর বাসায় তিন নরডিক রাষ্ট্রদূতের বৈঠককে ‘ব্যক্তির’ বাসায় বৈঠক হিসেবে দেখছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। তৌহিদ হোসেন বলেন, এটা বরং আমরা এভাবে দেখি, তারা একজন ব্যক্তির বাসায় গেছেন। তিনি যদি অপরাধী হতেন অবশ্যই তাকে হেফাজতে রাখা হতো, এটাতো হয় নাই। আর রাষ্ট্রদূতরা যে কারো বাসায় যেতে পারেন। তবে তারা কি নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন, সেটার ফলাফল নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকতে পারে। এমনিতে গেছেন তারা, এটা নিয়ে তাদের আমার বলার কিছু নাই।
বিদেশি মিশন থেকে ছবি সরানো নিয়ে অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপতি: বিদেশে বাংলাদেশি মিশনগুলো থেকে রাষ্ট্রপতির ছবি নামিয়ে ফেলাকে কেন্দ্র করে দেশ-বিদেশে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে আক্ষেপ প্রকাশ করে সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিটি হাতে পেয়েছেন উপদেষ্টা। তৌহিদ হোসেন বলেন, উনি তার অনুভূতিটা ব্যক্ত করেছেন। এটা নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না। চিঠিটা আমি পেয়েছি, অবশ্য দেরিতে; এটা সামাজিক মাধ্যমে চলে আসছে অনেক আগে। চিঠিটা ফিজিক্যালি আমার কাছে পৌঁছেছে অনেক দেরিতে। কোনো উত্তর দিয়েছেন কি না- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, আমার মনে হয় এটা নিয়ে কথা না বলি। রাষ্ট্রপতি, উনি অনেক উপরের বিষয়। উনি তার অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন, এতটুকুতে আমরা থাকি। রাষ্ট্রপতির ছবি নামানো নিয়ে কোনো আইন করা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, কোনো আইনও করা হয়নি, চিঠিও ইস্যু করা হয়নি। কিন্তু এমনিতে সাধারণভাবে কোনো ছবি থাকবে না এটাই হলো নিয়ম। আমার মনে হয় এটা নিয়ে এখানেই আমরা থেকে যাই। এটা নিয়ে বিতর্ক থাকবে।
উল্লেখ্য, গত আগস্টে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিদেশে বাংলাদেশি যেসব মিশনগুলোতে রাষ্ট্রপতির ছবি টাঙানো ছিল, সেগুলো নামানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে দেশ-বিদেশে নানা আলোচনা চলে।













