
দুলাল হোসেন মন্ডল
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে স্বামীর অমানবিক নির্যাতন সইতে না পেরে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন আলেয়া বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধু। আলেয়া উপজেলার বিয়াড়া গ্রামের ভ্যানচালক ভুট্টুর দ্বিতীয় স্ত্রী। শনিবার দুপুরে বিয়াড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় প্রতিবেশীরা জানান, প্রায় ২০ বছর আগে সদর উপজেলার ধুকুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আলেয়ার সাথে বিয়ে হয় কামারখন্দ উপজেলার বিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক ভুট্টুর। বিয়ের পর থেকেই আলেয়াকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে তার স্বামী। বিয়ের ৩/৪ বছরেও যখন ভুট্টুর স্ত্রী সন্তান ধারণ করতে না পারায় স্ত্রীকে তালাক দেন স্বামী ভুট্টু। পরে সামাজিক শালিসের মাধ্যমে তাদের আবারও বিয়ে দেয়া হয়। কয়েক বছর পর এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন স্ত্রী আলেয়া। প্রথম সন্তান জন্মের ৫ বছর পর জন্ম হয় আরেক পুত্র সন্তানের। তাতেও থেকে নেই আলেয়ার উপর নির্যাতন। অব্যাহত নির্যাতনের মধ্যেও ভ্যানচালক স্বামী ও সন্তানদের ছেড়ে যাননি স্ত্রী আলেয়া। স্ত্রী আলেয়া থাকার পরও পাশের গ্রাম নান্দিনা কামালিয়ার এক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে আলেয়ার স্বামী ভুট্টু। প্রেমের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত গড়ায় বিয়েতে। দ্বিতীয় বিবাহ করার পর দ্বিতীয় স্ত্রীর পরামর্শে আলেয়ার উপর আরো অমানবিক নির্যাতন চালায় ভুট্টু। সবশেষ পাষন্ড স্বামীর অসহনীয় নির্যাতন সইতে না পেরে গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করে দুই সন্তানের জননী গৃহবধু আলেয়া। সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগ সুত্রে জানা যায়, ডা. ফয়সাল আহম্মেদের পরামর্শে সকাল ১১টায় আলেয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বেলা ১২ দিকে তিনি মারা যান। গৃহবধু আলেয়ার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। গৃহবধু আলেয়া মৃত্যুর খবরে তার পরিবারের সদস্যরা বাড়ী ও হাসপাতাল থেকে আত্মগোপনে চলে যান।কামারখন্দ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র দেব জানান, এ ঘটনায় আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ দায়ের করেন নাই। অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।